নুনো মেন্দেসের বাড়ানো বক্সের বেশ বাইরে থেকে আসা ক্রস পায়ের পাতার টোকায় জালে জড়িয়ে দিলেন। এরপরই কর্নার ফ্লাগের দিকে ছুটে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে দুই হাতে মুখ চেপে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। এই গোলের মাধ্যমে যে কীর্তি তিনি গড়েছেন, তাতে ওই অশ্রু মোটেও দুঃখের নয়, তা আবেগের আনন্দাশ্রু।
লিসবনে বৃহস্পতিবার রাতে ‘এ’ লিগের গ্রুপ-১ এর ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতে উয়েফা নেশন্স লিগে শুভসূচনা করেছে পর্তুগাল। দলের দ্বিতীয় গোলটি করে ক্যারিয়ারের ৯০০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছেন রোনালদো। বিশেষ ওই মুহুর্ত গড়েই তাই নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি পর্তুগিজ মহাতারকা।
পেশাদার ফুটবলে রোনালদোর প্রথম গোলটি করার সময় যে শিশুটির জন্ম হয়েছিল, আজ ২১ বছরের যুবক সে। অথচ রোনালদোর ক্যারিয়ারের যৌবন ফুরানোর কোনো লক্ষণ নেই।
এই তো সেদিনকার কথা, ২০০২ সালের ৭ অক্টোবর ১৭ বছর আট মাস ৩ দিন বয়সে স্পোর্তিং লিসবনের জার্সিতে মোরেইরেন্সের বিপক্ষে জোড়া গোল করে এক কিশোর। সেদিন ফুটবল বিশ্বের নজর কাড়তে পারেনি সেই ছেলেটি। অথচ কে জানত, ওই গোল দুটিই দীর্ঘ এক সাফল্যমণ্ডিত ক্যারিয়ারের শুরু; ওই গোলের মধ্য দিয়েই ফুটবল বিশ্বের সব মনোযোগ আস্তে আস্তে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেবে সে?
অথচ সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে আরও এগিয়ে চলেছেন পর্তুগিজ সুপারস্টার। ৩৯ বছর বয়সে ৯০০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়ে তিনি বললেন পর্দার পেছনের কথা-
‘৯০০ গোল, সবাই বিষয়টি দেখবে এভাবে যে, রোনালদো আরও একটি মাইলফলক ছুঁয়েছে। কিন্তু আমি জানি এখানে পৌঁছাতে দিনের পর দিন কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছে আমার। এটি আমার ক্যারিয়ারের অনন্য এক প্রাপ্তি।’
‘শ্রমেই সাফল্য’ নীতিতে বিশ্বাসী এই মহাতারকার কণ্ঠে আবারও ঝরল সেই বাণী-
‘আমি রেকর্ড ভাঙার চেষ্টা করি না, রেকর্ডই আমার পেছনে ছোটে।’