ঢাকায় বাতাস প্রতিনিয়তই বাসিন্দাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় নবম স্থানে উঠে এসেছে শহরটি।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৯টা ১১মিনিটে ১১৫ একিউআই স্কোর নিয়ে শহরটি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে বাড়িয়ে তুলেছে। নগরীর এ বাতাসকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ভারতের দিল্লি, মিশরের কায়রো ও পাকিস্তানের লাহোর যথাক্রমে ২৭৩, ২০২ ও ১৯৮ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
বায়ুমান সূচক (একিউআই) অনুসারে, ঢাকার বাতাস সবসময়ই বিশ্বের সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর তালিকার উপরের দিকে থাকে। কখনও কখনও তা ঝুঁকিপূর্ণও হয়ে ওঠে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে, তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। সেটা বেড়ে ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে চলে এলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে পৌঁছায়। এতে বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
আরও পড়ুন: অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস
একিউআই সূচক ৫টি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
২০২৩ সালে বাংলাদেশে পিএম ২.৫ মাইক্রোনের গড় ঘনত্ব ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বার্ষিক বায়ুমান নির্দেশনার চেয়ে ১৬ গুণ বেশি।
২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ুদূষণের ৩টি প্রধান উৎস হলো— ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘দূষণে শহরটি ক্রমাগত বসবাসের অযোগ্য হলেও সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টাস্কফোর্সটি আগামী বর্ষাকাল পর্যন্ত কাজ করবে।