একটি উন্মুক্ত, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ক্ষেত্র উন্নয়নের জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন বিমসটেকের মহাসচিব রাষ্ট্রদূত ইন্দ্র মণি পান্ডে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ঢাকায় উদ্বোধন করা গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট (জিডিসি) সম্পর্কিত আঞ্চলিক কনসাল্টেশনটি উদীয়মান প্রযুক্তি, ডিজিটাল অর্থনীতি এবং সাইবার নিরাপত্তা ইত্যাদি মোকাবিলায় দেশগুলোর আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলো আরও ভালভাবে বুঝতে সহায়তা করবে।
তিনি জিডিসির ধারণাটি চালু এবং চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ইউএন সামিট অব দ্য ফিউচারের সময় এটি গ্রহণ করার লক্ষ্যে কাজ অব্যাহত রাখায় জাতিসংঘ মহাসচিব এবং তার প্রযুক্তি বিষয়ক দূতকে ধন্যবাদ জানান।
শনিবার (২২ জুন) বাংলাদেশে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) সচিবালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রিজিওনাল কনসালটেশন অন গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট (জিডিসি) উদ্বোধন করা হয়েছে।
রিজিওনাল কনসালটেশন অন গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্টের (জিডিসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'স্মার্ট বাংলাদেশ' রূপকল্পের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জিডিসির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
কাউকে পেছনে ফেলে না রাখার লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্তি এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে ডিজিটাল অবকাঠামো এবং অর্থনীতিতে বর্ধিত সুবিধার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন তিনি।
তিনি বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রাপ্তির বৈষম্য দূরীকরণে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
আগামী ২৩ জুন সমাপ্ত হতে যাওয়া দুই দিনের এই অনুষ্ঠানটির লক্ষ্য হলো- নিউইয়র্কে জাতিসংঘে জিডিসি সম্পর্কিত চলমান আলোচনায় একটি ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর আরও সহজ করার অভিন্ন উদ্দেশ্য এবং প্রাসঙ্গিক অগ্রাধিকারগুলো তুলে ধরা।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে জিডিসি সম্পর্কিত চলমান আলোচনায় একটি ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর সহজতর করার জন্য অভিন্ন উদ্দেশ্য এবং প্রাসঙ্গিক অগ্রাধিকারগুলো চিহ্নিত করে। দুই দিনের এই অনুষ্ঠানটি শেষ হবে আগামী ২৩ জুন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কা সফরে ষষ্ঠ সামিটের প্রত্যাশা তুলে ধরলেন বিমসটেক মহাসচিব
আলোচনায় বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি ইউএন-এসকাপ ও বিমসটেক সচিবালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (সার্ক ও বিমসটেক) রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রসমূহের জন্য জিডিসির মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ক্ষেত্র তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এ পর্যন্ত গ্লোবাল কমপ্যাক্টে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে এমন কিছু বিষয়ের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল আশা প্রকাশ করেন, এই কনসালেকশনের মাধ্যমে আইসিটি খাতের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা এবং উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করার উপায় খুঁজে বের করা হবে।
দুই দিনের এই অনুষ্ঠানে পাঁচটি কারিগরি অধিবেশন রয়েছে। এতে বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলো জিডিসির পাঁচটি মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কিত অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনার সুযোগ পাবে। যা একটি সুরক্ষিত ডিজিটাল পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং টেকসই প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য এই অঞ্চলের সহযোগিতা এবং প্রচেষ্টাকে কাজে লাগানোর সুযোগ পাবে।
আরও পড়ুন: উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য পরবর্তী বিমসটেক সম্মেলনে কিছু উল্লেখযোগ্য ফলাফল আসতে যাচ্ছে: মহাসচিব