পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুত্ববাদী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভিত্তি তৈরি করছে।
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার।’
ভারতের ৭৬তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বিগত বছরগুলোতে দু'দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে আসছে। বাংলাদেশ পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, উদ্বেগ ও অগ্রাধিকারের ওপর ভিত্তি করে সম্পর্ক জোরদারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ রাজনৈতিক নেতা, উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, ব্যবসায়ী নেতা, সম্পাদক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সেলিব্রেটিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ, নিজের স্বার্থ দেখবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, তারা পারস্পরিক সম্পর্ককে এমন একটি জনকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ— যেখানে উভয় দেশের জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত হবে।
তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, সদিচ্ছা, পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে আমাদের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।’
দুই দেশের শুরুতে দুই দেশের জাতীয় সংগীতের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, এটি বিশ্বে অনন্য যে দুটি জাতীয় সংগীতই একই কবি নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা, যা সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করে।
সারা জীবন শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে কাজ করা এই উপদেষ্টা বলেন, ৭৬ তাকে নিজের বয়সের কথা মনে করিয়ে দেয়। 'আমার বয়স স্বাধীন ভারতের সমান'
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বহুমুখী এবং আমাদের অভিন্ন ইতিহাস, ভৌগোলিক নৈকট্য, সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং মানুষে-মানুষে সংযোগের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত।
উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণ ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বাংলাদেশের জনগণ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
আরও পড়ুন: সীমান্ত ইস্যু একদিনে সমাধান সম্ভব নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের লক্ষ্য ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা, যাতে অভিন্ন সমৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।
বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী ভারত উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ আশা করে এই সম্পর্ক ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে হবে।’
জনকেন্দ্রিক সম্পর্কের প্রশ্নে উপদেষ্টা ওয়াহিদুদ্দিন তার কিছু ব্যক্তিগত মন্তব্য তুলে ধরেন এবং বলেন,তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু কয়েকজন ভারতীয় শিক্ষাবিদ রয়েছেন— তারা ভারতে থাকেন বা বিদেশে থাকেন।
তিনি বলেন, তারা অনেক গবেষণা নেটওয়ার্ক এবং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহযোগিতা করে এবং ধারণাগুলো বিনিময় করে।
উপদেষ্টা বলেন, 'আমি আস্থার সঙ্গে বলতে পারি যে, ভারত ও বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের অনেকের এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আমাদের দুই দেশের পারস্পরিক শুভেচ্ছা ও বোঝাপড়ায় অবদান রাখবে।’
ওয়াহিদউদ্দিন ভারতের সরকার ও জনগণকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানান।
বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক চিরকাল অটুট থাকার প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: ‘বাতিঘর, নায়ক-স্থিতিশীলতার বিস্ময়কর প্রতিচ্ছবি’ হিসেবে অভিহিত ড. ইউনূস