প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে এবং বেআইনিভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ করেছে। একই সঙ্গে কারা ক্ষমতায় যাবে সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দিয়েছে জনগণকে।
তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর পর থেকে দেশে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে যা দীর্ঘ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে পরিচালিত করে। তাই আজকাল কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তি অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে পারে না।’
মঙ্গলবার রংপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সংবিধানে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করে ২০১১ সালের ৩০ জুন ১৫তম সংশোধনী সংসদে পাস হয়। যার ফলে অবৈধ ক্ষমতা দখলের অবসান ঘটে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে সামরিক আইন জারি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছে এবং এতে দেশের জনগণের ভোট ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিরোধীরা আমার ব্যর্থতা খুঁজে পেলে সংশোধন করব: সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ঘোষণার (সর্বোচ্চ আদালতের রায়) পর সংবিধানে (১৫তম) সংশোধনী এনে দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছি। এই গণতন্ত্রের উদ্দেশ্য হলো জনগণের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করা এবং কে ক্ষমতায় যাবে বা যাবে না, তা সিদ্ধান্ত নিতে তাদের ক্ষমতায়ন করা।’
কিন্তু, জনগণের ক্ষমতায়ন তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের একটি অংশের জন্য হৃদয় জ্বালার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ তারা কখনই জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে না।
তিনি বলেন, তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে এবং আবারও করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা, যারা কখনই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারে না এবং জনগণের মুখোমুখি হতে ভয় পায়, এই কারণে তাদের ভেতরের জ্বালা আছে।’
বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই ১৯৯৯ থেকে ২০০১ মেয়াদে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রস্তাব অনুযায়ী স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন রবিবার
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহি করতে তার সরকারের প্রণীত নতুন আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার কমিশনকে পূর্ণ আর্থিক স্বাধীনতা দিয়েছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত রংপুর সিটি কর্পোরেশনের (আরসিসি) নতুন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথ পরিচালনা করেন এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং সঞ্চালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।
গত ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র পদে জয়ী হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
আরও পড়ুন: ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত না থাকলে উন্নয়নের এই স্তরে পৌঁছাত না বাংলাদেশ’: প্রধানমন্ত্রী