ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, বুধবার রাত ১১টায় সৌদি এয়ারলাইন্স (এসভি-৮০৪) বিমানযোগে রিয়াদ হয়ে দেশে পাঠানো হচ্ছে হোসনাকে। দেশে ফেরার বিষয়টি রিয়াদ বিমানবন্দর থেকে নিজেই ব্র্যাককে নিশ্চিত করেছেন হোসনা।
সৌদি আরব থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়ে সম্প্রতি ভিডিও বার্তা দেয় হোসনা। স্ত্রীকে নিরাপদে দেশে ফেরত আনতে পরে সরকারের কাছে আকুতি জানান তার স্বামী শফিউল্লাহ।
হোসনার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দালাল শাহীন মিয়া ও প্রস্তাবিত রিক্রুটিং এজেন্সি আরব ওয়ার্ল্ড ডিস্ট্রিবিউশনের প্রলোভনে পড়ে এজেন্সি আল-সারা ওভারসীস (আরএল-৭৫২) এর মাধ্যমে সৌদি যায় হোসনা। সৌদি যাওয়ার পর থেকে সেখানে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
হোসনা ভিডিও বার্তায় তার ওপর চালানো নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে জীবন বাঁচানোর আকুতি জানান স্বামী শফিউল্লাহর কাছে। কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে শফিউল্লাহ ছুটে যান দালাল ও আরব ওয়ার্ল্ড ডিস্ট্রিবিউশন অফিসে, তারা হোসনাকে দেশে আনতে দুই লাখ টাকা দাবি করেন পরিবারের কাছে।
শরিফুল হাসান জানান, কোনো উপায় না পেয়ে ২৪ নভেম্বর ব্র্যাকের সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন হোসনার স্বামী শফিউল্লাহ। এরপর নিরাপদে হোসনাকে দেশে ফেরত আনতে পরিবারটিকে সার্বিক সহায়তার সিদ্ধান্ত নেয় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম।
এর আগে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নারী গৃহকর্মী হোসনা আক্তারকে উদ্ধারের পর পুলিশের নজরদারিতে সেইফহোমে রাখা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের উদ্যোগে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, হোসনা আক্তার সৌদি রিক্রুটিং অফিস ‘রুয়াদ নাজরানের’ (লাইসেন্স নং- ৩৯১৮৬১৮) মাধ্যমে প্রায় তিন মাস আগে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। তিনি সৌদি আরবের জেদ্দা শহর হতে প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার দূরে নাজরান শহরে কাজ করতেন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে দেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।
হোসনা আক্তারের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ উপজেলায়। তার পিতার নাম মো. মুজিবুর রহমান।
এর আগে, সৌদি আরব থেকে ভিডিও বার্তায় জীবন বাঁচানোর আকুতি জানানোর পর গত ১৫ নভেম্বর দেশে ফিরে আসেন আরেক প্রবাসী পঞ্চগড় জেলার সুমি আক্তার।