বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা না করলেও আগামী ঈদ পর্যন্ত কোনো পণ্য ঘাটতি থাকবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২১ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই। আগামী ঈদ পর্যন্ত কোনো পণ্য ঘাটতি থাকবে না। আমরা তো বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি না। বাজার যাতে সঠিকভাবে কার্যকর থাকে, চাহিদা ও যোগান অনুসারে যাতে মূল্যটা নির্ধারিত হয় এবং আমদানিকৃত পণ্যের দাম যাতে নির্দেশক মূল্যের কাছাকাছি থাকে, এটাই আমাদের চেষ্টা থাকে। আমরা তো ন্যায্যমূল্যের দোকান খুলিনি। এটা তো মুক্তবাজার অর্থনীতি।’
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রমজানের আগে-পরে আমরা বাজার স্থিতিশীল রাখতে তৎপর ছিলাম। নতুন সরকার আসার পরে সময়টা কম ছিল, জোরটা অনেক বেশি ছিল— বাজারে যাতে কোনোভাবে খাদ্যের কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের কোনো সংকট না হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রমজানের পরে বাজার স্থিতিশীল ছিল। সরবরাহ ঠিক থাকার পরেও ঈদ এলে আমাদের দেশের কিছু সুযোগসন্ধানী লোকের কারণে জিনিসপত্রের দাম দু-এক জায়গায় বেড়ে যায়।’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত রোজার ঈদের সময় যেভাবে মনিটরিং করেছি, সেভাবেই এবারও ঈদে যাতে ভোক্তারা কোনো অসুবিধায় না পড়েন, ন্যায্যমূল্যে জিনিসপত্র পায়, সেজন্য দিকনির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
মনিটরিং আবারও চালু হবে জানিয়ে আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে বাজারে স্বাভাবিক গতিতে কার্যক্রম চলার জন্য এই মনিটরিং। ঈদে আমাদের বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। আমাদের অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন। তাহলে আমাদের কার্যক্রম জোরদার হবে, দৃশ্যমান হবে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো উৎপাদন কিংবা সরবরাহ করি না। আমরা মোটামুটি কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে তাদের কাছ থেকে সরবরাহ পেয়ে ভোক্তাদের কাছে নিশ্চিত করি। তাদের নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ যেহেতু খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ছিলেন না, তাই ঈদের আগে আরেকবার বসব। সেখানে খাদ্য ও কৃষিপণ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেব।’
ডলারের দাম বাড়ায় আমদানিনির্ভর পণ্যের দামও বাড়বে। এতে ভোক্তাদের ওপর চাপ বাড়বে কিনা; জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে চাই, ডলারের অ্যাডজাস্টমেন্টটা হলো ১০ টাকা থেকে ১৭ টাকা। এতে ভোক্তা পর্যায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমদানিকারকরা তখনই অভিযোগ করছিলেন যে ব্যাংক থেকে তারা সরকারি নির্দিষ্ট রেটে ডলার পাচ্ছিলেন না, তারা তখনই ১২০ টাকা ১২২ টাকা—একেক জন একেকভাবে প্রাইভেটলি সেটলড (নিষ্পত্তি) করছিলেন।’
‘এখন সরকার সমন্বয় করার কারণে সরকারি রেটেই তারা আমদানি করতে পারবেন। কাজেই আমদানিনির্ভর পণ্য— বিশেষ করে ভোজ্য তেলের কোনো সমন্বয় করব না।’
উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকরা ঈদ পর্যন্ত নতুন করে কোনো মূল্য বেঁধে দেবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আগে যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল, ঈদের আগ পর্যন্ত নতুন কোনো দাম নির্ধারণ করা হবে না। পুরোনো দামেই তারা সরবরাহ করতে পারবেন।’
তাহলে ঈদের পরে ক্রেতাদের জন্য দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে এমন প্রশ্নে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনীতির কোথায় কী হবে, সেটা নিয়ে আগাম ধারণা করা যাবে না। তবে এই মুহূর্তে নতুন করে মূল্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না। যদি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায়, তাহলে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চিন্তা করব।’