ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ট্যালেন্ট পার্টনারশিপের আওতায় আইরিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি এবং আইরিশ প্রযুক্তি খাতে মেধাবী বাংলাদেশি আইটি পেশাজীবীদের নিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে বাংলাদেশ।
সোমবার ডাবলিনে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে প্রথমবারের মতো ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দ্বিবার্ষিক পরামর্শবিষয়ক প্রথম সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।
বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে ৫২ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো চুক্তি সই হলো।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং আয়ারল্যান্ড প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ হ্যাকেট।
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ডকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বন্ধু হিসেবে দেখা উচিত বাংলাদেশের: আইরিশ মন্ত্রী
এ সময় আরও ছিলেন আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনীমসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা ও লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, উদীয়মান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সম্ভাবনা সর্বাধিক কাজে লাগাতে দুই দেশ যত দ্রুত সম্ভব নিজ নিজ রাজধানীতে দূতাবাস খোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিশেষ করে অফশোর বায়ুশক্তি প্লান্টে বিনিয়োগসহ লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড, অভিযোজন এবং বিনিয়োগসহ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিকভাবে ভবিষ্যৎ জলবায়ু সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: মাসুদ জামিল খান আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল নিযুক্ত
এ সময় তারা গাজা পরিস্থিতি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও রোহিঙ্গা সংকটসহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।
বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মোমেন স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, '১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় আইরিশ জনগণ ও রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক ও মানবিক সমর্থনসহ আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক ক্ষেত্র নিয়ে আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত জো হ্যাকেটের সঙ্গে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত প্রায় ২০ হাজার বাংলাদেশির বাণিজ্য, বিনিয়োগ, লাভজনক কর্মসংস্থান, অভিবাসন ও গতিশীলতা এবং কল্যাণে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর নতুন সুযোগগুলো অনুসন্ধান করেন তারা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠনকারী সাবেক আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শন ম্যাকব্রাইডের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান পররাষ্ট্র সচিব।
আরও পড়ুন: ২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউর জিএসপি সহায়তা পেতে আয়ারল্যান্ডের সহায়তা প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর
আইরিশ এন্টারপ্রাইজ, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী সিমন কোভেনি টিডির অতি সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে মহাসচিব জো বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্য পেশাজীবী নিয়োগ ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যতমুখী ও ইতিবাচক সম্পৃক্ততার প্রতি আয়ারল্যান্ড সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
আয়ারল্যান্ডের মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দেড় দশকে বাংলাদেশের অসাধারণ প্রবৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং মিয়ানমার থেকে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে অসাধারণ মানবিক আচরণের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান।
মহাসচিব হ্যাকেট দ্বিতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশনে বাংলাদেশ সফরের প্রত্যাশা করেন।
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রীকে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর