বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) প্রবর্তিত ইলেকট্রনিক গর্ভনমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেম বাস্তবায়নের সাফল্য সম্পর্কে জানতে, বুঝতে এবং নিজের দেশে তা বাস্তবায়ন করতে সাত সদস্যবিশিষ্ট শ্রীলঙ্কার একটি সরকারি ক্রয়বিষয়ক প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছে। তিনদিনের এ সফরে বিপিপিএ’র সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে দলটি।
রবিবার (২ জুন) প্রতিনিধি দলটিকে স্বাগত জানান বিপিপিএ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. শোহেলের রহমান চৌধুরী। এরপর তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সেশনে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন শ্রীলঙ্কার পাবলিক ফিন্যান্স দপ্তরের মহাপরিচালক ই এ রাত্নাশিলা।
দলটিতে শ্রীলঙ্কার ই-জিপি সেক্রেটারিয়েট, জাতীয় প্রকিউরমেন্ট কমিশন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও পাবলিক ফিন্যান্সের কর্মকর্তারা রয়েছেন। তাদের সঙ্গে রয়েছেন দেশটিতে কর্মরত বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিনিধিও।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু
বাংলাদেশে ই-জিপি সিস্টেমের বাস্তবায়ন জানা ও বোঝার জন্য এর আগেও ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার একটি ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল তৎকালীন সিপিটিইউ পরিদর্শন করে। ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সিপিটিইউকে বিপিপিএ’তে রূপান্তর করা হয়।
শ্রীলঙ্কার চলতি সফরসহ এ পর্যন্ত মোট ১২টি দেশ ও ৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থা ই-জিপি বিষয়ে মত বিনিময়ের জন্য বিপিপিএ (তৎকালীন সিপিটিইউসহ) পরিদর্শন করেছে। দেশগুলো হচ্ছে- তানজানিয়া, মিশর, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়া, অস্ট্রিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভূটান, আফগানিস্তান, নেপাল, গাম্বিয়া এবং সংস্থাগুলো হলো- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আইএমএফ, উই কানেক্ট ইন্টারন্যাশনাল, কোরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি ও সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ (ইউকে)।
২০১১ সালের ২ জুন সরকারি কেনাকাটার ডিজিটাইজেশনের জন্য ই-জিপি পোর্টাল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর থেকে দেশে ই-জিপির দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটে চলেছে। বর্তমানে ই-জিপির মাধ্যমে সরকারি কেনাকাটাসহ চুক্তি ব্যবস্থাপনার সকল কাজ অনলাইনে সম্পন্ন হচ্ছে। বাংলাদেশের এই পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ক্রয় ব্যবস্থা দেশ ও বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
ই-জিপি চালু করলেও প্রযুক্তিটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ কীভাবে ই-জিপির সফল বাস্তবায়ন করেছে, তা জানতে ও বুঝতেই তাদের এ সফর বলে উল্লেখ করেছেন প্রতিনিধি দলটির নেতা।
বিপিপিএ’র ই-জিপি সিস্টেম পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় লিড পরামর্শক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছে দোহাটেক নিউ মিডিয়া, সঙ্গে রয়েছে বেক্সিমকো আইটি ডিভিশন ও জিএসএস ইনফোটেক লিমিটেড।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের জন্য ৩০ দিনের একক প্রবেশ ভিসার বর্তমান ফি বহাল রাখবে শ্রীলঙ্কা
প্রথম দিনের কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন বিপিপিএ’র কর্মকর্তা ও কারিগরি বিশেষজ্ঞরা। দলটিকে বাংলাদেশে ই-জিপি বাস্তবায়নের পটভূমি ও প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেন বিপিপিএ’র সিইও মো. শোহেলের রহমান চৌধুরী।
প্রতিনিধি দলটিকে ই-জিপির বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ডাটা সেন্টার ম্যানেজমেন্ট ও ই-জিপি সিকিউরিটি বিষয়ে তাদের ধারণা দেন মোহাম্মদ মইনুল হোসেন, ই-জিপিতে নতুন প্রযুক্তি বিষয়ে জানান আবু মো. মোস্তফা, ই-জিপি সিস্টেম পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বক্তব্য দেন নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং বাংলাদেশে ই-জিপির সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন মো. মোশাররফ হোসেন।
এ ছাড়াও দলটিকে ই-জিপির বিভিন্ন ব্যবহারিক দিক নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করে দোহাটেক নিউ মিডিয়া।
উল্লেখ্য, ই-জিপি বাস্তবায়ন বিষয়ে ব্যবহারিক ধারণা লাভের জন্য এলজিইডি কার্যালয়ও পরিদর্শন করবে প্রতিনিধি দলটি। আগামী ৪ জুন তাদের এ সফর শেষ হবে।
ই-জিপি সিস্টেম বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে বিশ্বব্যাংক।