নির্বাচন কমিশনার(ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, এককালীন ব্যবহারের জন্য চিপ তৈরি হওয়ায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে(ইভিএম)কারচুপি সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার রাজধানীর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ ইভিএমে কিছুই নতুন করে লেখার সুযোগ নেই। এছাড়াও প্রোগ্রামিং পরিবর্তন করার কোন সুযোগ নেই।’ অনেকে মনে করেন এটা নির্বাচন কারচুপির মেশিন, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা।
কমিশনার আলমগীর বলেন, ‘বিগত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি ইভিএমে কারচুপির কোনও সুযোগ নেই। কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিগত দল দ্বারা ইভিএম পরীক্ষা করতে বলেছে।’
কমিশনার বলেন, ইভিএম নিয়ে প্রথমেই বলতে হবে প্রোগ্রামিং করে ফলাফল উল্টে দেয়া যায়।
তিনি বলেন, এ ধরনের বক্তব্য তাত্ত্বিকভাবে সঠিক হলেও কার্যত ভুল হতে পারে।
তিনি আরও বলেন,‘আপনি বলতে পারেন যে একটি কোম্পানির ওষুধ ভেজাল হতে পারে, কিন্তু অন্য সব কোম্পানির ওষুধ ভেজাল নয়। মোদ্দা কথা হলো আমাদের ইভিএম আলাদা। অনেকেই বলছেন এটা ভারতে ব্যবহৃত ইভিএমের মতো। আসলে, এটি ভারতের সাথে তুলনা করা যায় না।’
তিনি আরও যোগ করেছেন যে ভারতে ইভিএমে ভোটার শনাক্তকরণ ম্যানুয়ালি করা হয় এবং বাংলাদেশে এটি ইলেকট্রনিকভাবে করা হয়।
তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের ছবি এবং আঙুলের ছাপ সহ ভোটার ডাটাবেস রয়েছে, তাই বাংলাদেশের ইভিএম প্রকৃত ভোটারদের শনাক্ত করতে পারে। ভারতের তা করার সুযোগ নেই।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে ইভিএমের জন্য যে প্রোগ্রামিং করা হয়েছে তা কেবল যোগ করতে পারে।
তিনি আরও বলেন যে ভোটাররা কেবল ভোট দিতে পারবেন।এর প্রোগ্রামিং সেভাবে করা হয়েছে যা অন্য কিছু করতে পারে না, তিনি বলেন।
তিনি বলেন যে এখানে এমন কোন সুযোগ নেই যে কেউ ডিভাইসটি ম্যানিপুলেট করতে পারে, এমনকি বাইরে থেকেও নয়। সুতরাং, একবার লেখা হয়ে গেলে পুনরায় লেখা বা সম্পাদনা করার সুযোগ নেই, কারণ এটি একবারের জন্য ব্যবহারযোগ্য।’
সাবেক ইসি সচিব আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে ইভিএমের সঙ্গে ইন্টারনেটের কোনও সংযোগ নেই।
ব্যালট ইউনিটের সঙ্গে প্রদত্ত সংযোগটি কাস্টমাইজযোগ্য। এর মধ্যে কিছুই ঢোকানো যাবে না। শুধুমাত্র এই ইভিএমের জন্য যে ডিভাইসটি তৈরি করা হয়েছে তা ছাড়া আপনি অন্য কোনও ডিভাইস যোগ করতে পারবেন না।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ব্যবহৃত ইভিএম শুধুমাত্র ক্যালকুলেটরের মতো যোগ-বিয়োগ করে। ক্যালকুলেটরগুলোর প্রোগ্রাম পরিবর্তন করার বিকল্প নেই, এই মেশিনগুলোও একই।
তিনি বলেন, ‘যারা ইভিএম নিয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে, তারা এটা জানে না বা বোঝে না। তারা চাইলে যেকোনো ইভিএম পরীক্ষা করতে পারে।’
ইসি কমিশনার আরও বলেন, ইভিএমে ভোট দেয়ার সুবিধা হলো নির্বাচনের আগে বা পরে ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। ভোটার ছাড়া ভোট দেয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ‘ভোটাররা কেন্দ্রে না আসলে ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। ১০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হলে মাত্র ১০ শতাংশ ভোট দেয়া যাবে। অন্যদিকে,১০ শতাংশ ভোটারের পক্ষে প্রকৃতপক্ষে ব্যালটে ১০০ শতাংশ ভোট দেয়া সম্ভব। তাই ইভিএমের মাধ্যমে জালিয়াতির কোনও সুযোগ নেই।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে কারচুপিতে সহায়তাকারী প্রার্থী, এজেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নেবে না বলে এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রের বাইরে রাখা যাবে না।