১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের রিভিউ শুনানি মুলতবি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতির সৈয়দ রেফাত হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আংশিক শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামীকাল বুধবার সকালে আবার রিভিউ শুনানি করার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন আদালত।
শুনানি শেষে সাংবাদিকদের হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে ব্রিফিং করে এই তথ্য জানান আসামি পক্ষের আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির।
তিনি বলেন, আজকে রিভিও আবেদনের আংশিক শুনানি হয়েছে। আগামীকাল বুধবার সকালে আবার শীর্ষ গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে এটির শুনানি হবে।
আদালতে শুনানির বিষয়ে শিশির মনির বলেন, আজকে কথোপকথনের এক পর্যায়ে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে এডিশনাল গ্রাউন্ড চেয়েছে। কোন কোন গ্রাউন্ডে রিভিউ করা হবে। তার জন্য আমরা সাতটি গ্রাউন্ড আগে তৈরি করেছিলাম। সেই গ্রাউন্ডের কপি আজ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। এই গ্রাউন্ডে জামিন হবে কি হবে না তার শুনানি হবে আগামীকাল। শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন।
তিনি বলেন, মূলত তৎকালীন আদালত ওনাকে(আজহার) তিনটি ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিল। ওই মামলায় আরেকজন বিচারপতি ভিন্নমত পোষণ করে ওনাকে খালাস দিয়েছেন। এই বিষয়গুলো এই রিভিউ আবেদনে উঠে এসেছে।
শিশির বলেন, আমরা আশাকরি আগামীকাল আমাদের এডিশনাল গ্রাউন্ডে লিভ মঞ্জুর করবে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে শিশির মনির বলেন, প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না মর্মে অতীতে আদালত বলেছেন। এটিই আজকে রিভিউ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আদালতের আইন এখানে প্রযোজ্য হবে না—এই কথা বলে রায় দেওয়া হয়েছে। এটিএম আজহারুল ইসলাম, মতিউর রহমান নিযামী, আলী আহসান মুজাহিদসহ সকলের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনের প্রথাগত বিধান প্রযোজ্য নয় মর্মে যে রায় দিয়েছে, একটি ফাইন্ডিং দিয়ে মানুষগুলোকে দণ্ড দিয়ে তা কার্যকর করা হলো—আজকে যদি সেই রায়গুলো এই পয়েন্টে রিভিউ হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ না করার কারণে যে অবিচার হয়েছে— সেটি নতুন করে আবার প্রমাণিত হবে।
আন্তর্জাতিক আইনকে প্রয়োগ না করে অভ্যন্তরীণ আইন দিয়ে বিচার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন শিশির মনির।
এর আগে এটিএম আজহারের রিভিউ শুনানির তারিখ দেওয়া হলেও তা পিছিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়।