স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, এবারের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) ও ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জন (বিডিএস) ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল ইউনিট সুচারুরূপে দায়িত্ব পালন করবেন।’
বৃহস্পতিবার (৮ ফ্রেব্রুয়ারি) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটে এবারের এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) সভাপতি জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে মিলছে এক টাকায় এমবিবিএস চিকিৎসকের সেবা
মন্ত্রী এ বছর সুষ্ঠু ভর্তি পরীক্ষা নিশ্চিত করতে কিছু বিষয় উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো-
১. ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল ১০টা হতে ১১টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা দেশের ১৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রের ৪৪টি ভেন্যুতে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে।
২. বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে, যার মোট আসন ৫ হাজার ৩৮০টি। এছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে অনুমোদিত ৬৭ টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে, যার মোট আসন ৬ হাজার ২৯৫ টি।
৩. এমবিবিএস ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনয়ন, প্রকৃত শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও অনিয়ম বন্ধ এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি মেডিকেল কলেজে বিগত কয়েক বছর অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্নকরণ এবং ডিজিটালাইজেশনের ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ হয়েছে এবং একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
৪. সরকারি মেডিকেল কলেজের ধারাবাহিকতায় ভর্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়ম রোধ এবং শিক্ষার্থীদের নিকট হতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধের লক্ষ্যে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুন: যশোরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে এমবিবিএস ডাক্তার গ্রেপ্তার
৫. বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে অনলাইন প্রক্রিয়ায় শুরু হওয়ায় প্রকৃত শিক্ষার্থীদের হয়রানি, অনিয়ম ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের পথ বন্ধ হয়েছে এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিতের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় বিষয়টি জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
৬. প্রশ্নপত্র বহনকারী ট্রাঙ্কে একটি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস রয়েছে। যার মাধ্যমে অধিদপ্তর হতে পরীক্ষা কেন্দ্রে আনা-নেওয়া কার্যক্রম মনিটরিং করা হয়।
৭. ৯ তারিখ পরীক্ষার কেন্দ্র/ভেন্যুর গেট খুলবে সকাল ৮টায়। পরীক্ষার দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের পর কোনো পরীক্ষার্থী হলে প্রবেশ করতে পারবেন না।
৮. পরিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট কপি নিয়ে যেতে হবে।
৯. কেন্দ্র/ভেন্যু-তে পরীক্ষার্থীদের (ছেলে ও মেয়ে) পৃথক পৃথক তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র ও বল পয়েন্ট কলম ব্যতীত অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেলক্ষ্যে মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি আর্চওয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের বিষয়টি তদারক করা হবে।
১০. ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র/ভেন্যুতে সকাল ৮টা হতে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে ইনভিজিলেটরগণ (কক্ষ পরিদর্শক) সকাল ৮টা হতে পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্ষে অবস্থান করে প্রবেশপত্রে পরীক্ষার্থীর ছবির জলছাপ ও রঙিন ছবির সঙ্গে পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশের অনুমতি প্রদান করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
আরও পড়ুন: রমজান মাসে ১৫ দিন খোলা থাকবে স্কুল
১১. পরীক্ষার্থী, ইনভিজিলেটর ও ভেন্যুর কর্মকর্তা-কর্মচারীগণসহ মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ কোনোভাবেই মোবাইল, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্লুটুথ, এয়ারফোন, ইত্যাদি বহন করবেন না। ভর্তি পরীক্ষার হলে ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে জড়িত কেউ মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
১২. ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র/ভেন্যুতে ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারবে না।
১৩. ১০ জানুয়ারি হতে মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টারসমূহ বন্ধের নির্দেশনার জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে অফলাইন কোচিং সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও অনলাইন কোচিং বন্ধ ও সাইবার অপরাধ রোধকল্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
১৪. পরীক্ষার দিন পরীক্ষা কেন্দ্রসমূহের আশেপাশের ফটোকপি মেশিন বন্ধ থাকবে।
১৫. পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো প্রকার অসদাচরন/প্রতারনা/গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী