আইনের মারপ্যাঁচে কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও তাদের নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো গাফিলতি নেই বলে মন্তব্য করেছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
একই সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা প্রতিরোধে পুলিশের উপর কোনো রাজনৈতিক চাপ না থাকলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চাপ রয়েছে বলে জানান তিনি।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকার এফডিসিতে কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সামাজিক আন্দোলন নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা ও যাত্রাবাড়িসহ রাজধানীর ১০টি থানায় কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রব বেশি। আমরা অনেকগুলো কিশোর গ্যাং চিহ্নিত করেছি কিন্তু সরাসরি কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার ধরা যাচ্ছে না। আইনের মারপ্যাঁচে তাদের পৃষ্ঠপোষকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। তবে কিশোর গ্যাং নিমূর্লে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো গাফিলতি নেই।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা প্রতিরোধে পুলিশের উপর কোনো রাজনৈতিক চাপ না থাকলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চাপ রয়েছে। যারা অনেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।’
আরও পড়ুন: দেশে সড়ক দুর্ঘটনার অর্ধেকের বেশি মোটরসাইকেলে হয়: ডিএমপি কমিশনার
তিনি আরও বলেন, রাজধানীতে ২১ জন কাউন্সিলরের কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ থাকলেও তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে কিশোর অপরাধে পরিবার ও সমাজকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। খেলাধুলা, শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার অভাবে কিশোররা অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। ঢাকা শহরে শিশু-কিশোরদের সামান্য খেলার মাঠের জন্য আন্দোলন করতে হয়। আজকের শিশুরাই আগামীর বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে অপরাধমুক্ত সোনার মানুষ গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িতরা বেশিরভাগই অপরাজনীতির শিকার। অভিযোগ রয়েছে কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতা ও ‘বড় ভাই’রা শিশু-কিশোরদের তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করছে। অস্ত্র তুলে দিচ্ছে। রাজনৈতিক ও ব্যক্তিস্বার্থে অর্থের বিনিময়ে অপরাধ করাচ্ছে।
প্রশ্রয়দাতাদের তালিকা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠাতে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মনে কেরেন তিনি।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে “কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছার চেয়ে সামাজিক আন্দোলনই অধিক কার্যকর” শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রস্তাবের পক্ষে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা কমার্স কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক জি এম তসলিম, সাংবাদিক জিয়া খান, সাংবাদিক অনিমেষ কর, সাংবাদিক কাওসার সোহেলী। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: কেএনএফের তৎপরতা নিয়ে ঢাকায় সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই: ডিএমপি কমিশনার