ব্রহ্মপুত্র নদে নির্মাণাধীন কেওয়াটখালি আর্চ স্টিল ব্রিজ প্রকল্পে একনেক অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন করে পরিবেশ প্রাণপ্রকৃতি বিনাশ করে বিপুল অর্থ অপচয়ে অতিরিক্ত ২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণের প্রতিবাদে এক মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিকরা।
সোমবার (৭ জুলাই) বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন করেন তারা।
লেখক ও এক্টিভিস্ট আবুল কালাম আল আজাদের পরিচালনায় বক্তারা বলেন, একনেকের নকশার বাইরে ৩২ একর বাড়তি ভূমি অধিগ্রহণের কারণে রাষ্ট্রের ২ হাজার কোটি টাকা বাড়তি খরচ হবে। এতে অনেক স্কুল, মাদরাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতভিটা উচ্ছেদসহ প্রচুর কৃষি জমি, খাল, জলাশয় ভরাট হবে। ফলে তৈরি হবে জলাবদ্ধতা। বন্ধ হবে জন চলাচলের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। ফলে বিপন্ন হবে পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, কতিপয় প্রভাবশালীর চক্রান্তের শিকার হয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। অপরিকল্পিত সংযোগ সড়ক নির্মাণের কারণে (দুটি সেতুর সংযোগ সড়ক একই স্থানে মিলিত হওয়ায়) দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও যানজট বাড়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। শুধু তাই নয় এর জন্য রাষ্ট্রের বাড়তি ব্যয় হবে কমপক্ষে ৫ হাজার কোটি টাকা। তেমনটি হলে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি, জনদুর্ভোগ, পরিবেশ ও প্রকৌশলগত বিপর্যয় ঘটতে পারে। নকশাবহির্ভূত নির্মাণ কাজ অবিলম্বে বন্ধ না করলে প্রয়োজনে ময়মনসিংহ নগরী অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
সদাজাগ্রত ময়মনসিংহ, সম্মিলিত আন্দোলন ময়মনসিংহ, ন্যায্যতার পক্ষে ময়মনসিংহ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা বিমল পাল, মানবাধিকারকর্মী ও অ্যাডভোকেট এটিএম মাহবুব আলম, শিল্পী হোসাইন ফারুক, সংস্কৃতিকর্মী ইমতিয়াজ আহমেদ, সাংবাদিক কামরুল হাসান, কবি আরাফাত রিলকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ও মহানগরের নেতারা, ফয়সাল ফারনিম, আশিকুর রহমান, ফুয়াদ খান, আরিফ হাসান তমাল, আয়াশ, রুহান, ওয়ালিউল্লাহ ওলি, শরীফুল ইসলাম, আলিম, ওমর ফারুক, রুমা আক্তার পিংকী, ভূমি বিশেষজ্ঞ মজিবুর রহমান মিন্টু, উদ্ভাবক উদ্যোক্তা বিপ্লব নিভ, স্থানীয় সংবাদিক গণমাধ্যমকর্মী, কৃষক, শ্রমিক, নারী নেত্রী ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধিরা
‘সোজা রাস্তার বদলে ২ কিলোমিটার বাঁকা সড়কের কারণে ৩২ একর বাড়তি জমি অধিগ্রহণ এর পাশাপাশি নির্মাণ খরচ ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। অনুমোদিত নকশায় কাজ নাই, নকশার বাইরে কাজের তোড়জোড় কেন?’ প্রশ্ন তোলেন বক্তারা।
বক্তব্যে আরও বলেন, ‘একনেকের নকশা অনুযায়ী সংযোগ সড়ক বানাও, একনেকের নকশা বহির্ভূত কাজ বন্ধ কর’। প্রকল্পের বর্তমান নকশা অনুসরণ করলে এই অর্থে আরও দুটি সেতু নির্মাণ সম্ভব হত।
‘রুখে দাঁড়াও ময়মনসিংহ’, সদা জাগ্রত ময়মনসিংহ, সম্মিলিত ময়মনসিংহবাসীসহ অনেকগুলো সংগঠনের হাজার হাজার মানুষ এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের দাবি প্রকল্পের নকশা দ্রুত পর্যালোচনা করে একনেক অনুমোদিত নকশায় সংযোগ সড়কসহ ব্রিজের দ্রুত বাস্তবায়ন।