সব হত্যাকাণ্ডই অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘প্রতিটি জীবনের মূল্য আছে, সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করার পাশাপাশি সবাই যেন সুবিচার পায় সে বিষয় নিশ্চিত করা হবে।’
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ি সার্কিট হাউজে নারানখাইয়া স্বনির্ভর এলাকায় নিহত মামুন, জুলান চাকমা ও রুবেল ত্রিপুরার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন তিনি।
এসময় নিহতের পরিবারের সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়ার পাশাপাশি উপদেষ্টার মাধ্যমে সরকারের কাছে সহায়তা প্রার্থনা করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অবশ্যই প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা হবে। আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নাই।’
নিহতদের পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন উপদেষ্টা।
পাহাড়িদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই উল্লেখ করে এ ঘটনা যেন অন্য কোনো খাতে প্রবাহিত না করা হয় এবং এ ঘটনা নিয়ে পাহাড়ি বাঙালিদের মধ্যে যেন বিভেদ না হয় সে বিষয়ে নিহতদের পরিবারকে অনুরোধ করেন তথ্য উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে তাদের সবার অধিকার সমান। দুই জনগোষ্ঠীর বিভেদ নতুন করে উস্কে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
তথ্য উপদেষ্টা এছাড়াও খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ক্ষতিগ্রস্ত বাজার পরিদর্শনে যান।
সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে বাস টার্মিনাল এলাকায় স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙালিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বৈষম্যহীন বাংলাদেশে সবার অধিকার নিশ্চিত করা হবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘পাহাড়ে নানা ধরনের বৈষম্য রয়েছে। এখানে বসবাস করা জনগোষ্ঠীর নানা রকমের বঞ্চনা রয়েছে। আমরা লড়াই সংগ্রাম করে যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি, সেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে বৈষম্যহীন এক বাংলাদেশ গড়তে চাই। পাহাড়ে যারা ভেদাভেদ ও দূরত্ব তৈরি করে সুযোগ নিতে চায় তাদের কোনোভাবেই সুযোগ দেওয়া যাবে না। পাহাড় সমতল মিলে বাংলাদেশ।’
এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত লারমা স্কয়ার বাজারও পরিদর্শন করেন নাহিদ ইসলাম। ব্যবসায়ী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছ থেকে সহিংসতার বিবরণ শোনেন। সহিংস ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আশ্বাস দেন তথ্য উপদেষ্টা।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকালে খাগড়াছড়ি সদরে এক যুবককে চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে জেলার দীঘিনালায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের সংঘর্ষ হয়। পরে সহিংসতায় রূপ নেয়। এসময় লারমা স্কয়ার বাজারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। শতাধিক দোকানপাট পুড়ে যায়।