প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত সাম্প্রতিক চীন সফর।
রবিবার (১৪ জুলাই) গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'আমার এই সফর বাংলাদেশের কূটনৈতিক কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে চিহ্নিত হবে।’
শেখ হাসিনা জোর দিয়ে বলেন, গবেষণা, শিক্ষা, আইসিটি, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে যোগাযোগ এবং সহযোগিতা বাড়ছে; যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা ও একটি আধুনিক, স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।
আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি 'সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়'-এর প্রতি বাংলাদেশের আনুগত্যের কথা তুলে ধরেন, যা দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি, জলবায়ু পরিবর্তন, ফিলিস্তিন সংকট, মানবাধিকার, টেকসই উন্নয়ন ও জাতিসংঘের মতো বৈশ্বিক বাস্তবতা বিবেচনা করে পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীন উন্নয়নের অগ্রযাত্রা চালিয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন, যা অর্থনৈতিক সহযোগিতার বাইরেও এশিয়ার দেশগুলোর মতো ঐতিহ্যগত সম্পর্কের সঙ্গে প্রসারিত।
মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ইস্যু তুলে ধরে এ সংকট সমাধানে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন শেখ হাসিনা।
তিনি উল্লেখ করেন, চীনের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের প্রত্যাবাসনে চীনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।’
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ ও চীন একে অপরের সমর্থন চালিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার সম্পর্ক সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতা অংশীদারিত্বের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, গত ১০ জুলাই দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ এবং বাণিজ্যিক ঋণে সহায়তার চারটি ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করেন শি জিনপিং।
এই চারটি প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশকে ২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দিতে সম্মত হয়েছে চীন।