ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (রমনা জোন) হারুন অর রশিদকে রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ডিএমপি থেকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলির আদেশ জারি করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।
শনিবার রাতে শাহবাগ থানায় দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের অভিযোগে এডিসি হারুনকে রমনা অপরাধ বিভাগ থেকে ডিএমপির পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) বিভাগে বদলির আদেশ জারি করার কয়েক ঘণ্টা পর নতুন পদায়নের এ আদেশ দেওয়া হয়।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের জারি করা ডিএমপির বদলির আদেশে বলা হয়েছে, ‘জনস্বার্থে হারুন অর রশিদকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ডিএমপির রমনা বিভাগ থেকে পিওএম বিভাগে বদলি করা হয়েছে।’
অন্যদিকে, আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সই করা পুলিশ সদর দপ্তরের নতুন পোস্টিং অর্ডারে উল্লেখ করা হয়েছে, এডিসি হারুনকে ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তার নতুন কর্মস্থল এপিবিএনে যোগদানের জন্য তার বর্তমান দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। অন্যথায়, বদলির আদেশ অনুসারে তাকে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ হিসেবে গণ্য করা হবে।
মারধরের শিকার ওই দুই নেতা হলেন- আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম ও বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে এডিসি হারুন ও ছাত্রলীগের দুই নেতার কয়েকজন অনুসারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
তবে এডিসি হারুন সেখান থেকে চলে গেলেও কিছুক্ষণ পর পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নাঈম ও শরীফকে শাহবাগ থানায় নিয়ে মারধর করেন।
এ ঘটনার পর কোনো পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বারডেম হাসপাতালে ৩৩তম বিসিএসের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছিলেন এডিসি হারুন। নারী কর্মকর্তার স্বামী বিষয়টি জানতে পেরে নাঈম ও মুনিমকে নিয়ে সেখানে যান। ওই নারী কর্মকর্তার স্বামীও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং তারা সবাই গাজীপুরের বাসিন্দা।
তারা বারডেম হাসপাতালে পৌঁছালে রাত ৯টার দিকে এডিসি হারুনের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।পরে হারুন শাহবাগ থানায় গিয়ে পুলিশ বাহিনী নিয়ে ফিরে এসে শরীফ ও নাঈমকে থানায় নিয়ে নির্যাতন করেন।
রাত ১টার দিকে তাদের থানা থেকে ছেড়ে দিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হারুন তাদের থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে গেলেও থানার প্রধান ফটক ভেতর থেকে তালা দেওয়ায় কিছু করতে পারেননি।
এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ না থাকায় অভিযুক্ত ভুক্তভোগী ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি।