চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে।
গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশ (জিসিবি) এবং নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) যৌথ প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
২৪টি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং ৯টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ২৬টি দুর্ঘটনায় চার নারী ও পাঁচ শিশুসহ ২৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ফেব্রুয়ারিতে ৪২টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৪ ও ৭। নিহতের তালিকায় ১৪ নারী ও দুই শিশু রয়েছে।
মার্চে ১৮টি দুর্ঘটনায় ছয় নারী ও দুই শিশুসহ ১১ জন নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন। এপ্রিল ও মে মাসে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও মে মাসে পণ্যবাহী ট্রেন চলাকালে রেলপথে চারটি দুর্ঘটনা ঘটেছে; যাতে এক নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন।
জুন মাসে দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ১৫। এতে এক নারী ও দুই শিশুসহ ১৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া বলেন, তাদের পর্যবেক্ষণে এসব দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির পেছনে পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো: মোবাইল ফোনে আলাপরত অবস্থায় রেলপথ পারাপার, রেলপথ সংলগ্ন এলাকায় চলাচলের ক্ষেত্রে পথচারীদের সচেতনতার অভাব, রেলপথ ক্রসিংগুলোর (সড়ক ও রেলপথের সংযোগ স্থল) কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতি, কিছুসংখ্যক রেলসেতুসহ অনেক স্থানে রেলপথ দীর্ঘদিন সংস্কার না করা এবং দূরপাল্লার ট্রেনগুলোর চালকদের অসতর্কতা।
জিসিবির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, দুর্ঘটনা ও হতাহতের এই চিত্র মূলত চার মাসের। দেশজুড়ে লকডাউনের কারণে ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ কিংবা ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও সারা বছরেই রেলপথে বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বে অবহেলা যেমন দায়ী, তেমনি পথচারিসহ সাধারণ মানুষের অসতর্কতাও কম দায়ী নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।