পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর চেয়ে আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
এসময় অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর লক্ষ্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন তিনি।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার এখন আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং অর্থনীতি স্থিতিশীল করা। শুধু জিডিপির ওপর গুরুত্বারোপের ফলে টেকসই উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ গুণগত মানদণ্ডগুলো উপেক্ষিত হয়েছে।’
উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আর্থিক সক্ষমতার পরিমাণ বিবেচনা না করেই অনেক প্রকল্প শুরু করা হয়েছিল, সেটা স্থানীয়ভাবে বা বিদেশি উৎস থেকে অর্থায়ন হোক না কেন। কিছু প্রকল্প যথাযথ অগ্রাধিকার ছাড়াই শুরু করা হয়েছে এবং স্বার্থান্বেষী মহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।’
অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে এমন ক্ষেত্রগুলোতে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অপ্রয়োজনীয় ব্যয় থেকে তহবিল পুনর্বরাদ্দের গুরুত্বের ওপর জোর দেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, 'আমার কাছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর চেয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই দুটো পরস্পর সংযুক্ত।’
চলমান ও প্রাথমিক পর্যায়ের প্রকল্পগুলোর মধ্যে বর্তমান অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনগুলো সেটি পুনরায় মূল্যায়ন করা হবে এমনটাই ইঙ্গিত দেন ওয়াহিদউদ্দিন। মানবসম্পদ উন্নয়নের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, শুধুমাত্র অবকাঠামোর মাধ্যমে সমৃদ্ধির চালিকা শক্তি অর্জন করা যায় না। মানবসম্পদ উন্নয়ন অপরিহার্য। এটি ছাড়া অবকাঠামো শুধুই কংকাল।
দেশের বৃহত্তর অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়নকে একীভূত করতে নিজের সক্ষমতার ওপর আস্থা রাখতে বলেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
মেগা প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ কী হবে জানতে চাইলে ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, সরকার কোনো একটি নীতি মেনে চলবে না, বরং সময় ও ব্যয় কমানোর দিকে মনোনিবেশ করবে। বড় প্রকল্পসহ অনেক প্রকল্প চার থেকে পাঁচবার সংশোধন করতে হয়েছে। এ ধরনের ভুলের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হবে।
মূল্যস্ফীতি ও জিডিপিসহ অন্যান্য সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা।
দক্ষতার অভাব নাকি ইচ্ছাকৃত ভুলের কারণে এই সমস্যা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।