নিজ ক্যাম্পাসে রুফটপ সোলার সিস্টেম ব্যবহার করে সৌর শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
সময়োপযোগী এই প্রকল্পে বুয়েটকে কারিগরি সহায়তা করছে জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।
জেনেক্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে পিএসএল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড গ্রিন এনার্জি লিমিটেড এবং প্যাসিফিক সোলার অ্যান্ড রিনিওয়াবল এনার্জি লিমিটেড।
পরিবেশবান্ধব বিকল্প শক্তির উৎস ব্যবহার করে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর চাপ কমানো, সেইসঙ্গে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে ভূমিকা রাখাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
বুয়েট দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সোমবার (৬ নভেম্বর) বুয়েটের যন্ত্র প্রকৌশল ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, বুয়েটের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর ড. আবদুল জব্বার খান এবং জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জিপিপিএস কনসোর্টিয়ামের চেয়ারম্যান তানজিদুল আলম।
আরও পড়ুন: কিউএসের বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই ঢাবি-বুয়েট
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের এই উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বুয়েট সব সময়ই নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। সেই বুয়েটেই এখন সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রকল্প শুরু হয়েছে, যা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি অনুপ্রেরণামূলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আমার বিশ্বাস।’
বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, ‘যুগোপযোগী এই প্রচেষ্টায় কারিগরি সহায়তা করার জন্য জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে আমি সাধুবাদ জানাই। বিশ্বের অনেক দেশই এখন সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করছে এবং সুফলও পাচ্ছে। বুয়েটের এই উদ্যোগ আশা করি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে এমন পরিবেশবান্ধব প্রকল্প নিয়ে আমরা আরও কাজ করতে চাই।’
জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জিপিপিএস কনসোর্টিয়ামের চেয়ারম্যান তানজিদুল আলম বলেন, ‘এমন একটি সময়োপযোগী উদ্যোগে বুয়েট-এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান হতে পেরে আমরা গর্বিত। শুরু থেকেই প্রজেক্টের বাস্তবায়নে জেনেক্স সর্বোচ্চ টেকনিক্যাল সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যমান ডলার সংকটেও যাতে প্রজেক্টটি বাধাগ্রস্ত না হয় এবং দ্রুত সম্পন্ন হয় সেজন্য জিপিপিএস কনসোর্টিয়াম গঠন করে আমরা একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রকল্পের আওতায় বুয়েটের ১৯টি ভবনে রুফটপ সোলার প্যানেল স্থাপন করবে জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। যার মাধ্যমে ৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এতে বুয়েটের দৈনিক বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশ পূরণ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ২৫ বছরে বুয়েটের বার্ষিক আনুমানিক প্রায় তিন কোটি টাকা সাশ্রয় হবে; একই সঙ্গে কমানো সম্ভব হবে প্রায় ১ কোটি ২ লাখ মেট্রিকটন কার্বন ফুটপ্রিন্ট।
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ: ডিসিসিআই-বুয়েটের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর