আর্থিক খাতের সংস্কারের পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘ভূ-রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে তার প্রভাব আমাদের ওপরও পড়বে।’
নবনির্বাচিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের উদ্বোধনী অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
এর আগে তিনি সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ২০২৪ সালের প্রথম সংসদ অধিবেশন আহ্বান করেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে।
৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সংসদ গঠিত হয়।
তিনি আসন্ন বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কৃষি খাতের উৎপাদন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে হবে।
উৎপাদন বাড়াতে উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারেরও আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
তিনি আরও বলেন, শস্য গুদাম ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উন্নয়ন করতে হবে।
আরও পড়ুন: শপথ নিলেন ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রাপ্তির জন্য দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি সই ও বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
তিনি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গভীর সমুদ্রে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদারের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, 'দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পাশাপাশি দক্ষ শ্রম রফতানি করতে যাতে নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান করা যায়।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি মহল সহিংসতা ও সংঘাত সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের শান্তিপূর্ণ ধারাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। তাদের গণতন্ত্রবিরোধী ও সহিংস কর্মকাণ্ড জনগণকে সাময়িকভাবে উদ্বেগের মধ্যে ফেললেও গণতন্ত্রের চেতনা ভোটারদের ভোটদানে বিরত রাখতে পারেনি।
তিনি বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের গৃহীত সকল পদক্ষেপ গণমানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে সুফল বয়ে এনেছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা দলগুলো নির্বিঘ্নে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সহিংসতা ও নৈরাজ্য পরিহার করে সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, জনগণের কল্যাণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে অহিংসভাবে গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করবে।
আরও পড়ুন: ৩ দিনের সফরে পাবনায় গেছেন রাষ্ট্রপতি
সরকারও এ বিষয়ে যথাযথ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।
২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১টি ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছেন। তবে ৫৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্ষমতাসীন দলের সদস্য।
অধিবেশনের শুরুতে সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন এবং রাষ্ট্রপতি তাদের শপথ পাঠ করান।
এর আগে আওয়ামী লীগরে সংসদীয় দল স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুকে ওই পদগুলোতে মনোনয়ন দেয়।
জাতীয় সংসদের প্রেসিডেন্ট বক্সে ফার্স্ট লেডি ড. রেবেকা সুলতানা এবং রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।