দেশ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর কর্মসূচি গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, ‘আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কিছু সংগঠন পোশাকখাতে শ্রমিক ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দেওয়ায় বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, যা নিতান্তই অনাকাঙ্ক্ষিত।’
এতে তিনি আরও বলেন, এ ধরনের একটি কর্মসূচি কখনই সমর্থনযোগ্য নয়, বরং আমরা মনে করি, এটি শিল্পকে অস্থিতিশীল করার একটি অপচেষ্টা। জাতীয় ও অন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমরা যখন এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সেই সময়টিতে ধর্মঘটের নামে যেকোনো কর্মসূচি পালন করা হলে তা আমাদের অথনীতিকে ব্যাহত করবে, সেই সঙ্গে বহির্বিশ্বে শিল্প সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দেবে এবং ক্রেতাদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি করবে, যা মোটেই কাম্য নয়।
করোনা পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী মুল্যস্ফীতির চাপ এখন পর্যন্ত সামলে উঠা সম্ভব হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উন্নত দেশগুলো সুদের হার ও মর্টগেজ রেট বাড়িয়েছে। এতে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা ও খুচরা বিক্রয় কমে এসেছে এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে পণ্যের দরপতন ঘটছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী পণ্যের বিক্রি ও চাহিদা কমছে, দরপতন তীব্রতর হচ্ছে, উৎপাদন খরচ বেড়ে প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। এ সময় নতুন নূন্যতম মজুরি এরই মধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০২৪ এর জানুয়ারির শুরু থেকে নতুন মজুরি পাওয়া শুরু করবে।
এরকম পরিস্থিতিতে শিল্পে ধর্মঘট পালনের মতো কর্মসূচি গ্রহণ একান্তভাবেই অনভিপ্রেত - শিল্প ও অর্থনীতির জন্য মোটেও তা শুভ নয়। মনে রাখা বাঞ্চনীয়, শিল্প না থাকলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শ্রমিক ভাই-বোন। তাদের জন্য দেশে বিকল্প কর্মসংস্থানের খাত এখন পর্যন্ত গড়ে উঠেনি।
কিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতি এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। শিল্পের প্রবৃদ্ধি, আমাদের অর্থনীতি ও দেশের আর্থ-সামাজিক সমৃদ্ধির পরিপূরক। তাই এই শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা টিকিয়ে রাখা আমাদের শ্রমিকদের, তাদের পরিবার এবং বৃহত্তর অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফারুক হাসান বলেন, এ অবস্থায় দেশ ও অর্থনীতির স্বার্থে পোশাক শিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করছি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের শ্রমিক ভাই-বোনেরা তাদের জীবিকার প্রধান উৎসটি কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেবেন না। আপনারা কোনো ধরনের প্ররোচনা ও অপচেষ্টায় নিজেদের সম্পৃক্ত করবেন না। আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি, সবার ঐকান্তিক সহযেগিতায় পোশাক শিল্প আরও বহুদূর এগিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে।