বাংলাদেশের বস্ত্রখাত এখন আর একজন মোড়লের উপর নির্ভরশীল নয় বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে আমরা প্রতিযোগিতা করে বাজার তৈরি করছি, বিশ্ববাজার আমরা দখল করছি।
আরও পড়ুন: পাট উৎপাদনে উৎসাহিত করা হবে: পাটমন্ত্রী
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে পোশাকশিল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
নির্বাচনের আগে বলা হচ্ছিল পোশাক শিল্পের বাজার কমে যাচ্ছে, ছোট হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বিজিএমইএর সভাপতি বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। আপনি যে জায়গার কথা ইঙ্গিত করছেন, আমিও সেই জায়গার কথার আলোকে বলছি, তার রিপোর্টে আজ আশ্বস্ত হয়েছি।
শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে গার্মেন্টস মালিকদের অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। আমি তাদের সামনেই বলতে চাই, গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন কত ছিল, আজকে তাদের কত বেতন। আমি বলব না তাদের অনেক বেতন। তবে আমি এ কথাও বলব, কেউ কেউ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গার্মেন্টস শিল্পকে ব্যবহার করতে চায়। কেউ কেউ অসন্তোষ সৃষ্টি করে আমাদের দেশের পণ্য উৎপাদনকে ব্যাহত করে, এ শিল্পবাজারটিকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র করে। সে ষড়যন্ত্র বার বার উদঘাটন হয়েছে এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক রয়েছি। যেখানে শ্রমিক আছে, যেখানে কর্মী আছে, যেখানে কর্মচারী আছে সেখানে দেনদরবার থাকবেই। কাজেই দেন দরবারের মধ্য দিয়েই আমাদের চলতে হবে। সবাইকেই একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সফলতার পরে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে যে নবযাত্রা করেছেন সেই নবযাত্রায় আমরা সবাই মিলে এক সঙ্গে যোদ্ধা হিসেবে কাজ করব। যেকোনো জাতীয়/আন্তর্জাতিক পরিবেশ/পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমার সবাই বিগত দিনে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি এবং থাকবো।
আরও পড়ুন: পাটজাত পণ্য রপ্তানি আয় দ্বিগুণ করতে চাই: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী
তিনি বলেন, বিজিএমইএর সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক পুরোনো। এ শিল্পে যখনই সংকট তৈরি হয়েছে আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি। সেটা কি অগ্নিকাণ্ড, কি শ্রমিক অসন্তোষ, কি রানা প্লাজা ধস সব জায়গাই আমি দায়িত্ব পালন করেছি।
পাটমন্ত্রী বলেন, সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে বিদ্যুৎ সরবরাহকে স্বাভাবিক রাখার জন্য। গ্যাস সংকট রয়েছে। এটাই স্বাভাবিক। গ্যাসের ব্যবহারও অনেক। চেষ্টার কোনো ত্রুটি করা হচ্ছে না। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সর্বদা সাশ্রয়ী হতে হবে, মিতব্যয়ী হতে হবে।
সম্প্রতি জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে অনুষ্ঠিত আম্বিয়ান্তে ফেয়ারে অংশগ্রহণ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আমি মেলায় বাংলাদেশ, ভারতসহ অন্যান্য দেশের স্টল পরিদর্শন করেছি। বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের পাটজাত পণ্যের ডিজাইন ও নিউ ট্রেন্ড দেখেছি। আমি খুবই আশ্চর্যজনকভাবে লক্ষ্য করেছি আমাদের অনেক উদ্যোক্তা চমৎকার পরিবেশবান্ধব পণ্য সামগ্রী নিয়ে মেলায় অংশ গ্রহণ করেছে।
ভারত ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ নিলেও টাঙ্গাইল শাড়ি আমাদের ছিল, আমাদের আছে, আমাদের থাকবে। এজন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাওয়াসহ যা যা করা দরকার তা করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহী মিশর: পাটমন্ত্রী