আকস্মিক কুয়াশায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে প্রায় দেড় ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে হঠাৎ ঘন কুয়াশা জেঁকে বসায় সামান্য দূরের কিছুই দেখতে না পাওয়ায় দুর্ঘনা এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেয় বিআইডব্লিউটিসি। এ সময় মাঝ নদীতে আটকা পড়ে ছোট-বড় ৬টি ফেরি।
প্রায় দেড় ঘণ্টা পর কুয়াশা কমলে সকাল পৌনে ১০টার পর ফেরি চলাচল শুরু হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় জানায়, সকালে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটে রো রো (বড়) ফেরি কেরামত আলী এবং ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি বনলতা নদী পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষায় থাকা ঢাকাগামী যানবাহন লোড করতে থাকেন। সকাল সোয়া ৮টার দিকে নদী অববাহিকায় আকষ্মিকভাবে ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। পরে উপায় না পেয়ে ফেরিগুলো ঘাটেই নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে নৌ চলাচল বন্ধ, মাঝ নদীতে আটকা ৪ ফেরি
একই সময় দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ঘাটে আরেকটি রো রো ফেরি শাহ পরানও যানবাহন বোঝাই করে নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সকাল পৌনে ১০ টার দিকে কুয়াশা কাটতে শুরু করলে একে একে ঘাট থেকে ফেরি ছাড়তে শুরু করে।
একইভাবে পাটুরিয়া ঘাটে নোঙরে থাকা ফেরিগুলো দৌলতদিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে আসতে থাকে। প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকাগামী শতাধিক যানবাহন নদী পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষায় আটকে থাকে।
এর আগে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ২টি রো রো ফেরি এবং পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ২টি রো রো ও ২টি ইউটিলিটি ফেরি মাঝ নদীতে এসে ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে। এই ৬টি ফেরিতে প্রায় ১৫০টির মতো যানবাহনে কয়েকশ যাত্রী ছিল।
রাজবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সৌহার্দ্য পরিবহনের বাস চালক রাশেদ খান বলেন, সকালে যাত্রী বোঝাই করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটে এসে ফেরিতে ওঠার অপেক্ষা করতে থাকি। কিছুক্ষণের মধ্যে বাসটি ফেরিতে ওঠলেও হঠাৎ এমন ঘন কুয়াশায় চারদিক ঢেকে যায়। এতে আমরাই অনেকটা ভয় পাই। পরে দুর্ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ ফেরি ছাড়া বন্ধ করে নোঙর করে অপেক্ষা করতে বলে।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
কুষ্টিয়া থেকে আসা লালন পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাট তত্বাবধায়ক ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, সকাল সোয়া ৮টার দিকে আকষ্মিকভাবে কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় আমরা সবাই ঘাটেই অপেক্ষা করতে থাকি। এ সময় লালন পরিবহন সহ অন্তত শতাধিক বিভিন্ন ধরনের গাড়ি নদী পাড়ি দিতে অপেক্ষা করছিল। পরে সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুয়াশা কমতে থাকলে ঘাট থেকে একে একে ফেরিগুলো ছাড়তে থাকে। আকষ্মিক কুয়াশার কারণে যাত্রী ও চালকদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. খোরশেদ আলম বলেন, সকাল সোয়া ৮টার পর আকস্মিক কুয়াশায় দৌলতদিয়া এবং পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় তেমন প্রভাব না পড়লেও মাঝ নদীতে থাকা ফেরিগুলো ঝুঁকিতে পড়ে। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ২টি বড় এবং পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা ২টি বড় ও ২টি ছোট ফেরি মাঝ নদীতে কুয়াশার কবলে পড়ে। মাঝ নদীতে ঘন কুয়াশায় ফেরি আটকে পড়ার খবর পেয়ে উভয় ঘাট থেকে ফেরি ছাড়া বন্ধ করে দেয়। সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: চালু হতে না হতেই চিলমারী নৌ-বন্দরের ফেরি সার্ভিসে বিপত্তি