ঢাকার ধামরাইয়ে আলাদীনস পার্কে বনভোজনে যাওয়া মিরপুরের বনফুল আদিবাসী গ্রীণ হার্ট কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বনভোজনে যাওয়া কলেজটির শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন হারানোর ঘটনায় পার্কের কর্মচারীদের সঙ্গে মারামারি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
পরে ঢাকার মিরপুরের বনফুল আদিবাসী গ্রীণ হার্ট কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল হাই মজুমদার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় পার্কের মালিলেক ছেলে রিফাত মাহমুদ, পার্কের ম্যানেজার রনি, পার্কের মালিক আলাউদ্দিন ও কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার পাল্লী গ্রামের রাকিব, অন্তর, কান্দাপাড়া গ্রামের মো. সুমন ও আলাদীনস পার্কের রাইড অপারেটর বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার নালুয়া গ্রামের মো. রানাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের সীতি এলাকার আলাদীনস পার্কে।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, পার্কের ভিতরে অফিসের সামনে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন হারানোর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পার্কের মালিকের ছেলে রিফাত মাহমুদের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রেসজ্জে সজ্জিত হয়ে শিক্ষক মন্ডলীসহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে শিক্ষক রিপন হালদারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরতর জখম হন। আহত হন আরও কয়েকজন।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বহন করা ৮টি বাস ভাংচুর করে পার্কের ষ্টাফ ও কর্মচারীরা। আহতদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় শিক্ষার্থীদের ২০-২৫টি এনড্রয়েড মোবাইল ফোন সেট নিয়ে নেয় পার্কের স্টাফ ও কর্মচারীরা।
জানা গেছে, উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের সীতি এলাকায় আলাদীনস পার্কে ঢাকার মিরপুর থেকে ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীণ হার্ট কলেজ’র প্রায় ৬০০ শিক্ষক- শিক্ষার্থী বনভোজনে আসেন। তাদের মোবাইল ফোন ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার জন্য পার্ক কর্তৃপক্ষ থেকে লকার দেওয়া হয়। ওই লকার থেকে মোবাইল হারানোর অভিযোগ এনে পার্কের কর্মচারী রিয়াদের সঙ্গে তর্ক হয় কয়েক শিক্ষার্থীর। এক পর্যায়ে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ সময় সুইমিংপুল সংলগ্ন ভবনের থাই গ্লাস ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে পার্কের কর্মচারীরা সেখানে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০জন আহত হয়। পরে পার্কের কর্মচারীরা পিকনিকে শিক্ষার্থীদের বহনকরা ৭-৮টি বাস ভাংচুর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বনফুল আদিবাসী গ্রীণ হার্ট স্কুল ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক জাকিদুল ইসলাম জানান, লকার থেকে ছাত্রদের মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে পার্কের কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পার্কের কর্মচারীরা ও এলাকাবাসী একজোট হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও বাস ভাংচুর করে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০জন আহত হয়।
পার্কের মালিক আলাউদ্দিন জানান, লকারে রাখা মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ এনে পার্কের কর্মচারী রিয়াদের সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয়। এরপর কয়েকজন কর্মচারীকে মারপিট করে শিক্ষার্থীরা ও পার্ক ভাঙচুর করে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। তবে বাস ভাংচুরের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
ধামরাই থানার ভারপ্র্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, আলাদীনস পার্কে পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্কের ষ্টাফ ও কর্মচারীদের মারামারির ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে।