প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাজির হয়ে এ তথ্য জানানোর পর এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর আগে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় (পিইসি) বহিষ্কার করা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়ে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল ঘোষণার নির্দেশ দিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। এ আদেশ অনুসারে আদালতে হাজির হন ডিজির দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদ।
আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। ডিজির পক্ষে ছিলেন শফিক মাহমুদ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, আদেশ অনুসারে বহিষ্কৃতদের পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বহিষ্কারের নিয়ম বাতিল করা হয়েছে।
পরে সোহেল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিন দিন বহিষ্কৃত প্রার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে ৩১ ডিসেম্বর ফলাফল প্রকাশ করেছি। আদালতের সব আদেশ প্রতিপালিত হওয়ায় মামলাটি নিষ্পত্তি করেছেন। আমরা ধারাটা রহিত করেছি, এখন আর বহিষ্কার হবে না।’
গত ১৯ নভেম্বর ‘পিইসি পরীক্ষায় শিশু বহিষ্কার কেন’ শিরোনাম নামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী জামিউল হক ফয়সাল। তার সঙ্গে ছিলেন এম মাহমুদুল হাসান, গাজী ফরহাদ রেজা ও মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ।
ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনার পর ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। রুলে পিইসি শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর জারি করা নির্দেশনার ১১ নম্বর অনুচ্ছেদ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গত রবিবার থেকে শুরু হওয়ার পর সোমবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট ১৫ শিশু বহিষ্কার হয়। পরীক্ষায় অসাধু পন্থা অবলম্বন করার অভিযোগে এসব শিশুকে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে নির্দেশনাও রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তবে শিক্ষাবিদ, মনোবিজ্ঞানী, শিক্ষক এমনকি অভিভাবকরা বলছেন, কোমলমতি শিশুদের এ ধরনের বহিষ্কার তাদের ওপর এক ধরনের মানসিক নির্যাতন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ২০১৮ সালের নির্দেশনার ১১ নম্বর অনুচ্ছেদে 'শৃঙ্খলা লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা'র বিষয়টি উল্লেখ ছিল।