বাংলাদেশ সুইস ব্যাংকে জমা রাখা বাংলাদেশি টাকার বিষয়ে তথ্য চাইলেও সুইস পক্ষ এই প্রশ্নের জবাব দেয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ও অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের সঙ্গে এই বিষয়ে আলাপের পর এ কথা বলেন মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ন্যাথালি শুয়ার্ডের উদ্ধৃতি দিয়ে কিছু গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়ায় তিনি গভর্নর ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিবৃতি দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে গভর্নর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি থেকে জানি। নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একটি ছোট গ্রুপের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ডের কাছে তথ্য চায়নি- এটা ঠিক নয়।
বুধবার ‘ডিকাব টক’ এ বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড বলেছেন, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ ‘সম্পূর্ণরূপে অনুমাননির্ভর’ এবং গণমাধ্যম ও অন্যান্য প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ বিষয়ে কোনো উপসংহারে আসা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘সুইজারল্যান্ড অবৈধ অর্থ রাখার জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল নয়।’
সুইস দূত বলেন, সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশি গ্রাহকদের ব্যক্তিগত আমানতের পরিমাণ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাবে না।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) বার্ষিক প্রতিবেদনে তথ্য পাওয়া গেছে, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ অর্থ জমা হয়েছে গত বছর। বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে এসব অর্থ জমা হয়েছে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে। ২০২১ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ৫৪ শতাংশ বেড়ে প্রায় ৮৭১ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক (সিএইচএফ) (৮৩.১৮ বিলিয়ন টাকা) হয়েছে। ২০২০ সালে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৬৩ মিলিয়ন সিএইচএফ।
এ সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, সুইজারল্যান্ড সত্যিই আন্তর্জাতিক মান বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, এই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ধরনের তথ্য আদান-প্রদানের জন্য তাদের দেশের সঙ্গে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও চুক্তি হতে পারে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার সুইজারল্যান্ড সরকারের কাছে নির্দিষ্ট করে কারো সম্পর্কে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমা নিয়ে কোনো তথ্য চায়নি।
তিনি বলেন, তারা অবশ্যই অর্থ পাচারকে উৎসাহিত করে না এবং সুইস ব্যাংক ব্যবস্থা সবচেয়ে প্রসিদ্ধ এবং আন্তর্জাতিকভাবে সংযুক্ত সিস্টেম।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সব ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই সর্বদা অপব্যবহারের ঝুঁকি থাকে। তবে সুইজারল্যান্ড সরকার সুইস ব্যাংকের ত্রুটি সংশোধন করতে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।