সম্প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি (এফআইপিএ) সইয়ের বিষয়ে কারিগরি দিকগুলো আলোচনা করতে কানাডাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান।
এফআইপিএ আলোচনা শুরুর বিষয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক প্রস্তাব কানাডার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আস্থা জোরদার করবে বলে মনে করেন তিনি।
একই সঙ্গে কানাডার ইন্দো-প্যাসিফিক বাণিজ্য প্রতিনিধির নেতৃত্বে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলকে আসন্ন ঢাকা সফরকে স্বাগত জানান তিনি।
কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে মহান স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি অটোয়ার হিল্টন গার্ডেন হোটেলে বাংলাদেশ হাইকমিশন এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
হাইকমিশনার বলেন, ঢাকা ও টরন্টোর মধ্যে সরাসরি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চালু করতে পারায় দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও ব্যবসা বাণিজ্যে গতিশীলতা এসেছে।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ অন্য সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী ও ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের কথাও তুলে ধরেন তিনি। উভয় দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এক লাখেরও অধিক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ানদের অবদানের প্রশংসা করেন।
পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সংলাপের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত খুনি নুর চৌধুরীকে ডিপোর্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফেরত দিয়ে আদালতের রায় কার্যকর করতে ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে কানাডা সহায়তা করবে বলৌ আশা প্রকাশ করেন হাইকমিশনার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংসদীয় সচিব রবার্ট অলিফ্যান্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কানাডার সমর্থন এবং পরবর্তীকালে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দিকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ভাবনা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মডেল হিসেবে কাজ করছে।
রবার্ট অলিফ্যান্ট মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১৩ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে মানবিক কারণে অস্থায়ী আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাঁদের নিজ দেশে টেকসই ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-সহ অন্যান্য ফোরামে কানাডা বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে।
পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি কানাডার অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশি-কানাডিয়ানদের অবদানের কথাও স্বীকার করেন।
কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের (সিবিপিএফজি) চেয়ারপার্সনসহ অন্যান্য সংসদ সদস্য ও সিনেটরগণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, পবিত্র রমজান মাসের কারণে ২৬ মার্চ-২০২৪ তারিখের পরিবর্তে ১৮ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে কানাডার সিনেটর, সংসদ সদস্য, অটোয়াস্থ কূটনৈতিক মিশনসমূহের প্রধান এবং বাংলাদেশি-কানাডিয়ানসহ দেড় শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন।