ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপের মধ্যে ৯ ডলারের বাণিজ্য রয়েছে। যার মধ্যে ৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে যায় এবং ৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে আসে। আমরা এ বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বাড়াতে আগ্রহী।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় ইইউ রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ।
অ্যাম্বাসেডর বলেন, ইইউ ও বাংলাদেশের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। এই ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন অভূতপূর্ব। বাংলাদেশ অচিরেই উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বাৎসরিক ৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন মিশনের কমার্শিয়াল সেকশন কাজ করছে।
তিনি বাংলাদেশে ইইউ’র বিনিয়োগ বৃদ্ধির ব্যাপারে তার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এছাড়াও তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি সইয়ের প্রস্তাব করেন।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, সিলেট বিনিয়োগের জন্য আদর্শ একটি স্থান। বিশেষ করে শিল্প, পর্যটন, চিকিৎসা ও আইটি খাতে সিলেট অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। সিলেটে পর্যাপ্ত তেল, গ্যাস ও শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দিতে আগ্রহী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ইইউ ‘অংশীদারি সহযোগিতা’ চুক্তি সই করতে আগ্রহী
তিনি সিলেটে বিনিয়োগের এ সুযোগ গ্রহণের জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে সিলেটে স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক স্থাপিত হয়েছে এবং সমগ্র বাংলাদেশে ১০০টি ইকোনমিক জোন স্থাপনের কাজ চলছে।
তিনি এসব প্রকল্প ও সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বিনিয়োগে ইউরোপিয়ান বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধকরণে ইইউ অ্যাম্বাসেডরের সহযোগিতা কামনা করেন।
এছাড়াও তিনি সিলেটে বিশ্বমানের নার্সিং ইন্সটিটিউট ও হোটেল ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনিং সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব করেন।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের শ্রমবাজার অনেক সস্তা। বিশেষ করে সিলেটে অনেক শিক্ষিত বেকার রয়েছেন, যারা বিভিন্ন বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে উপযুক্ত চাকরি পাচ্ছেন না। তাই বক্তারা ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলকে টার্গেট করে সিলেটে কার অ্যাসেম্বলিং ও অটো মোবাইল ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
এছাড়াও বক্তারা সিলেটে চিকিৎসা ও পর্যটন খাতে বিনিয়োগের জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইকোনমিক কাউন্সেলর আবু সাঈদ বেলাল, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, সহসভাপতি মো. আতিক হোসেন, পরিচালক আবু তাহের মো. শোয়েব, মুজিবুর রহমান মিন্টু, ফখর উস সালেহীন নাহিয়ান, দেবাংশু দাস, কাজী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য তোফাজ্জ্বল হোসেন এফসিএ, সিলেট চেম্বারের সচিব মো. গোলাম আক্তার ফারুক, উপসচিব সানু উদ্দিন রুবেল প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ইইউ বাজারে জিএসপি প্লাস বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে: রাষ্ট্রদূত