বাংলাদেশে বিগত দশকগুলোতে বেশ কয়েকটি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। যা জীবন ও জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল। সর্বশেষ ‘সিত্রাং’ নামক ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুত বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আরও ঘনীভূত হতে পারে। উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং সোমবার মধ্যরাত বা মঙ্গলবার ভোর নাগাদ পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার কাছে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতি বছর বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ঝড়-বৃষ্টি, নদীর তীরের ক্ষয়, ভূমিকম্প, খরা, লবণাক্ততা অনুপ্রবেশ এবং অগ্নিকাণ্ডের দ্বারা বিধ্বস্ত হয়। কিন্তু সেইসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ভালো প্রস্তুতি নিয়ে প্রশংসা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
এখানে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ও পরে আঘাত হানা বড় ঘূর্ণিঝড়গুলো হলো-
১. ১৯৭০ সালের ১০ নভেম্বর ভোলা ঘূর্ণিঝড়: বাংলাদেশে আঘাত হানা সবচেয়ে মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় এটি। সে সময় পাঁচ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল।
২. ১৯৮৫ সালের ২৪ ও ২৫ মে উড়িরচর ঘূর্ণিঝড়: ১১ হাজারের বেশি লোক মারা গেছে। এদের বেশিরভাগই চট্টগ্রাম উপকূলের উড়িরচর দ্বীপে বাস করতেন।
৩. ১৯৯১ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড়: এটি উপকূলীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং পটুয়াখালী, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালীর চরগুলোতে আঘাত হানে এক লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
৪. ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর ঘূর্ণিঝড়: ১৫ ডিসেম্বর কক্সবাজার, সংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চল এবং পটুয়াখালীতে ২১৭ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে। এবং প্রায় ১৯ হাজার ২৭৯ জনের প্রাণ নিয়েছিল।
৫. ১৯৬৩ ঘূর্ণিঝড় (২৮-২৯ মে): ঘূর্ণিঝড় নোয়াখালী, কক্সবাজার এবং সমুদ্র উপকূলীয় দ্বীপ সন্দীপ, কুতুবদিয়া, মহেশখালী এবং হাতিয়াতে আঘাত হানে। এতে প্রায় ১১ হাজার ৫২০ জনের প্রাণহানি হয়। এবং এটি সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়।
৬. ১৯৬১ ঘূর্ণিঝড়: ১৯৬১ সালের ৯ মে বাগেরহাট ও খুলনা জেলায় জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। এতে প্রাণহানি হয় ১১ হাজার ৪৬৮ জনের।
৭. ১৯৮৫ ঘূর্ণিঝড় (২৪-২৫ মে): এই প্রাণঘাতি ঘূর্ণিঝড়টিতে প্রায় ১১ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল।
৮. ঘূর্ণিঝড় সিডর (নভেম্বর ১৫, ২০০৭): এই ঘূর্ণিঝড়টিতেও প্রায় দেড় হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।