সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ দিন ঠিক করেন।
ফওজিয়া মঙ্গলবার অন্তত সকাল ১১টা পর্যন্ত যেন যোগদান করতে না পারেন তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্তকে নিশ্চিত করতে বলেছে আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
আদালতে ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, কোন কর্তৃত্ববলে সরকার এখানে মাউশি কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিলো। এটাতো দিবে গভর্নিং কমিটি।
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আবেদনটি নট টু ডে (আজ নয়) রাখেন। আমরা আইন দেখে বলবো।
জবাবে ইউনুছ আলী বলেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) অধ্যক্ষ যোগদান করার কথা। এ জন্য যোগদান স্থগিত করতে হবে।
তখন ডেপুটি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বিষয়টি আমরা দেখবো।’
পরে আদালত বলে, আগামীকাল এটি আদেশের জন্য থাকবে। আর অধ্যক্ষ অন্তত আগামীকাল ১১টা পর্যন্ত যেন যোগদান করতে না পারেন সে বিষয়টি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিশ্চিত করবেন।
আদালতে আবেদনটি দায়ের করেন ভিকারুননিসার গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুস আলী আকন্দ।
আবেদনের পর তিনি বলেন, ‘১৯৭৯ সালের রেজুলেশন ২(এ) (ই), ৩(১) (২) অনুযায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষমতা গভর্নিং বডির এবং ২০০৯ সালের রেজুলেশন ৪১ (২) (খ) (৪) অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা গভর্নিং বডির। কিন্তু সরকার অবৈধ ক্ষমতা ব্যবহার করে মাউশির একজন কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়।’
আবেদনে ফওজিয়াকে নিয়োগ দিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় প্রজ্ঞাপন স্থগিত চাওয়া হয়েছে। এছাড়া তার কার্যক্রমের ওপরে স্থিতাবস্থা জারিরও আর্জি জানানো হয়েছে।
শিক্ষা সচিব, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ, অ্যাডহক কমিটির চেয়ারম্যান, ঢাকা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট ১১ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
২০১৯ সালে করা এক রিট আবেদনের অংশ হিসেবে সম্পূরক আবেদন করা হয়।
এর আগে, রবিবার ফওজিয়াকে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের এই নিয়োগ আদেশে বলা হয়েছে, তিনি নিজ বেতনক্রম অনুযায়ী বেতন-ভাতা গ্রহণ করবেন এবং পদ সংশ্লিষ্ট ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়ার নজির বেশ কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ প্রতিষ্ঠানটিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়েই চলছিল প্রায় ১০ বছর। তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির ঐতিহ্য ধরে রাখতেই বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ এপ্রিল অনিয়মের অভিযোগে এক আদেশে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আদেশে বলা হয়, ‘অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় এ নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হলো।’
গত ২৮ এপ্রিল অধ্যক্ষ পদের প্রার্থী ভিকারুননিসার অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসিনা বেগম এ অনিয়ম তুলে ধরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়, ‘লিখিত পরীক্ষায় ৩০ নম্বরের মধ্যে আমি (হাসিনা বেগম) মাত্র ১০ নম্বর পেয়েছি, যা আমার নিকট অবিশ্বাস্য হিসেবে প্রতিয়মান হয়েছে।’
‘লিখিত উত্তরপত্র মূল্যায়নে ত্রুটি রয়েছে’ উল্লেখ করে হাসিনা বেগম লিখিত উত্তরপত্র ‘নিরপেক্ষ পরীক্ষক দ্বারা পুনঃমূল্যায়ন ও পুনঃনিরীক্ষণের’ দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ এপ্রিল ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে স্থায়ী নিয়োগের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।