পৃথক ১০ মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন গ্রহণ ও আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আগামী ১৫ জানুয়ারি শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানি শেষে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে চেম্বার বিচারপতি বলেছেন, রিটে হাইকোর্ট এভাবে আদেশ দিতে পারেন কি না-এমন প্রশ্নে বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি কার্যতালিকায় ১০ নম্বরের পরে বিষয়টি থাকবে। জামিন আবেদন দাখিল করলে (মির্জা ফখরুল) তা আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করবে। রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হলো।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় ২৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার দেখিয়ে মির্জা ফখরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর রমনা ও পল্টন থানায় করা পৃথক ১১টি মামলা হয়। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় মির্জা ফখরুলকে জামিন দেওয়ার প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বাকি ১০টি মামলায় তার জামিন আবেদন করেন। কিন্তু গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তা গ্রহণ করেনি।
আরও পড়ুন: ফখরুলের জামিন শুনানি ৩ জানুয়ারি: হাইকোর্ট
এ অবস্থায় ১০ মামলায় জামিন আবেদন গ্রহণ করে তা নিষ্পত্তির নির্দেশনা চেয়ে ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রিটে ১০টি মামলার মধ্যে পল্টন থানার ৭টি এবং রমনা থানার ৩টির কথা উল্লেখ রয়েছে। মামলাগুলো ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে বিচারাধীন। এসব মামলায় তার জামিন আবেদন করা হয়, যা ১২ ডিসেম্বর নিম্ন আদালত গ্রহণ করেননি বলে রিটে উল্লেখ করা হয়।
এ রিট দায়েরের পরের দিন ১টি মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পরে এই রিটের ওপর ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টে শুনানি হয়। সেদিন মির্জা ফখরুলের আইনজীবীরা জানান, ১০টির মধ্যে ইতোমধ্যে পল্টন থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অপর নয়টি মামলার ক্ষেত্রে জামিন আবেদন গ্রহণ করে আইন অনুযায়ী তা নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানান তারা। শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দেন। হাইকোর্ট রাজধানীর রমনা ও পল্টন থানায় করা পৃথক ৯ মামলায় জামিন আবেদন গ্রহণ করে আইনানুযায়ী তা নিষ্পত্তি করতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: ১০ মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা আজ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন ও তুষার কান্তি রায়।
অন্যদিকে মির্জা ফখরুলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন।
সগির হোসেন লিওন জানান, চেম্বার আদালত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করে আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তির নির্দশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নাশকতা মামলায় মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর জামিন নামঞ্জুর