মেধাস্বত্ত্ব চুরির অভিযোগ তুলে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ওরফে ড. জাহাঙ্গীর আলমের বাংলা একাডেমি পুরষ্কার বাতিলের দাবি জানিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার বিলডাকিনি চিত্রনাট্যের স্বত্ত্বাধিকারী ভুক্তভোগী মনজুরুল ইসলাম মেঘ।
বুধবার(৩০ জানুয়ারি) শাহবাগে এক অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মনজুরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে স্মারকলিপি দেব এবং ৬ ফ্রেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। এরপরও ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে ১০ তারিখ থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বাংলা একাডেমি ও বইমেলার সামনে লাগাতর আমরণ অনশন করব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান এবং গণতন্ত্রী পার্টির যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফুয়াদ হোসেন।
আরও পড়ুন: বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন ১৫ ব্যক্তি
মেঘ জানান, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘বিলডাকিনি’ চিত্রনাট্য আমার লেখা, অনুদানের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে এবং অনুদানপ্রাপ্ত চিত্রনাট্য আমার নামে কপিরাইট অধিদপ্তরে নিবন্ধিত হয়েছে। তারপরও চিত্রনাট্য চুরি করে অতিরিক্ত সচিব নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ওরফে ড. জাহাঙ্গীর আলম আংশিক পরিবর্তন করে আমার নাম বাদ দিয়ে নিজের নামে চালিয়েছেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে সরকারের গেজেট তুলে ধরে ঘোষিত বিলডাকিনি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য ও সংলাপ তার নিজের রচিত বলে দাবি করেন মেঘ।
মঞ্জুরুল বলেন, আমার লেখা চিত্রনাট্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত আছে এবং বাংলাদেশ কপিরাইট অধিদপ্তরে নিবন্ধিত হয়ে সনদ গ্রহণ করেছি। কপিরাইট নিবন্ধন নম্বর হলো সিআরএল-২৩৪৫৮।
আরও পড়ুন: সরকারি আমলাকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার দেওয়ার চলচ্চিত্র নির্মাতার প্রতিবাদ
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ড. জাহাঙ্গীর আলম বিলডাকিনি চলচ্চিত্রের পরিচালকের পদ থেকে আমাকে অবৈধভাবে বঞ্চিত করেছে। একই সঙ্গে ফজলুল কবীর তুহিনকে দিয়ে বিলডাকিনি ও গাংকুমারী নামে দুটি সিনেমা নির্মাণ করেছেন, যা চলচ্চিত্র অনুদান আইনবিরোধী, অসাংবিধানিক এবং রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ।
তিনি আরও বলেন, নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি অর্থ আত্নসাতের জন্য নিজের স্ত্রী খাতিজা বেগম মিতাকে বিলডাকিনি চলচ্চিত্রের নির্বাহী প্রযোজক এবং তার ঘনিষ্ঠবন্ধু আব্দুল মমিন খানকে প্রযোজক বানিয়েছেন।
মঞ্জুরুল বলেন, নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর আমার থেকে চিত্রনাট্য নেওয়ার সময় বলেছিলেন একজন পেশাদার চলচ্চিত্র প্রযোজককে দিয়ে সিনেমা প্রযোজনা করাবেন। কিন্তু অনুদানের গেজেট প্রকাশের পর জানতে পারি তিনি আসলে চলচ্চিত্র প্রযোজক নন। আব্দুল মমিন খান চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডাটা সলিউশন নামীয় একটি প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, যা চলচ্চিত্র অনুদান পাওয়ার অযোগ্য প্রতিষ্ঠান।
নূরুদ্দিনের বাংলা একাডেমি পুরস্কার ২০২৩ বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পত্তির অনুরোধ জানান মঞ্জুরুল।
আরও পড়ুন: বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ বিজয়ীদের নাম ঘোষণা