যশোরের বাঘারপাড়ায় ছয় বছরের শিশু রিক্তা খানমকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে প্রতিবেশী নাজমুল হককে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানা করা হয়েছে আরও একলাখ টাকা।
রবিবার ঘটনার ১৫ মাস পর যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির এ আদেশ দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নাজমুল হক (৩৬) ওরফে বান্দা আলী জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের ঠাকুরকাঠি গ্রামের নওশের আলীর ছেলে।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সেতারা খাতুন।
নিহত রিক্তা খানম একই গ্রামের মুক্তার হোসেনের মেয়ে। শিশুটি স্থানীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মক্তব ভিত্তিক শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
আদালত সূত্র জানায়, নাজমুল ও রিক্তা পাশাপাশি বাড়িতে থাকতেন। ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর সকাল থেকে রিক্তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না স্বজনরা। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায় পুকুরে তল্লাশি চালায়। তাদের সঙ্গে নাজমুলও খোঁজাখুঁজি করতে থাকে।
এরমাঝে নাজমুলকে তার বাড়ির পাশের একটি ফাঁকা স্থানে গর্ত খুঁড়তে দেখতে পান প্রতিবেশীরা। সেখানেই রিক্তার একটি স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে তাদের সন্দেহ হয়। নাজমুলকে জিজ্ঞাসা করলে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিবেশীরা তাকে ধরে ফেলে।
এক পর্যায়ে স্বীকার করে রিক্তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ নিজের ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রেখেছেন। লাশ ওই গর্তে পুতে রাখার চেষ্টা করছিলেন।
এ ঘটনায় রিক্তার বাবা মুক্তার আলী বিশ্বাস বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। আটকের পর আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যা ও ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন নাজমুল।
এরপর থেকেই কারাগারে আছেন নাজমুল। এরমধ্যে মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৭ মে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আওয়াল হোসেন।
এ মামলায় ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রবিবার বাদী ও আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। আসামি পক্ষ এ রায়ে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।