দেশের অত্যতম দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।
শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পত্রিকাটির ডিক্লারেশনের বাতিলের প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়।
এ সময় মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাংবাদিক নেতারা বলেন, কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই বিশেষ মহলের ইন্ধনে সরকার একটি গণমাধ্যমকে বন্ধ করে দিতে পারে না। কিন্তু যায়যায়দিনের ক্ষেত্রে তা-ই করা হয়েছে, যা গণতন্ত্র ও মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, চলমান রমজান ও ঈদের ঠিক আগমুহুর্তে এ ধরনের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ায় শত শত সংবাদকর্মীদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। তাই কোনো গড়িমসি না করে দ্রুত যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দিতে হবে। তা না করা হলে সাংবাদিকরা দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।
মানবন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকার নিশ্চিতে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। কিন্ত দেখা যাচ্ছে, দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ গেলেও সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীদের জীবিকা অনিশ্চয়তার মধ্যেই রয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ঢাকা জেলা প্রশাসক দখলদার শফিক রেহমান ও বিশেষ শিল্পগোষ্ঠেীর স্বার্থ রক্ষায় অনৈতিকভাবে দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন। সকল সংবাদকর্মীর পক্ষ থেকে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। স্বল্প সময়ের মধ্যে এই পত্রিকার ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাই।’
আরও পড়ুন: যায়যায়দিন দখলমুক্ত ও ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি
এই সাংবাদিক নেতা আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ইউনুস সরকার ক্ষমতায় এসেছে। অথচ তার সরকার ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই গণমাধ্যম বন্ধের মত জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
‘আমরা সরকারকে বলে দিতে চাই, এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না যা আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করে। অতীতে কোনো সরকার সাংবাদিক সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে সফল হয়নি; আপনারাও হবেন না।’
মানববন্ধন থেকে ডিক্লারেশন বাতিলের নির্দেশ প্রত্যাহার এবং তেঁজগাওয়ে যায়যায়দিনের প্রধান কার্যালয় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে পত্রিকাটির যুগ্ম বার্তা সম্পাদক শওকত হোসেন বাদল বলেন, ‘আজ আমাদের প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে দাঁড়ানোর কথা ছিল না, কথা ছিল সংবাদ যাচাই বাছাই ও সম্পদনা শেষে তা জনগণের জন্য প্রকাশের কাজ করার। কিন্তু জীবন-জীবিকা ও অধিকার আদায়ে এখানে আসতে বাধ্য হয়েছি। কারণ এইভাবে কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া পত্রিকা বন্ধ করে সারা দেশের সহস্রাধিক সংবাদকর্মীর জীবিকা হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে।’
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি গাজী আনোয়ার, ডিইউজের নির্বাহী পরিষদের সদস্য রাজু আহমেদ ও ফখরুল ইসলাম।
এ সময় বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী এবং যায়যায়দিনের কয়েক শ’ সংবাদকর্মী অংশ নেন।