যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নতুন অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার (৩০ আগস্ট) সকালে একটি গোলটেবিল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি। রাজধানীর একটি হোটেলে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নতুন কিছু কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ করতে চায়। তারা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধা ও অসুবিধার কথা বলেছেন। আমরা তাদের বলেছি যদি তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে তাহলে তাদের সব সমস্যার সমাধান করতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য সম্পর্কিত গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
এর আগে গোলটেবিলে দেওয়া বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমিতে বৈশ্বিক যে সংকট দেখা দিয়েছে তা সরকার ও বেসরকারি খাতের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। বর্তমান পরিস্থিতিতে যে চ্যালেঞ্জগুলো দেখা দিয়েছে তা মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি খাত উভয়ের যৌথভাবে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে মার্কিন অংশীদারিত্ব বিশেষ করে মার্কিন বেসরকারি খাত সংশ্লিষ্টদের বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানান।
তিনি জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আগামীর সিংহভাগ বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দেশের বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান: বাণিজ্যমন্ত্রী
টিপু মুনশি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তোরণ করবে। এতে কিছু উন্নত অর্থনীতির দেশে আমাদের শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার ব্যাহত হবে। কিন্তু জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি এই যাত্রায় মার্কিন সরকার ও মার্কিন বেসরকারি সংস্থাগুলোও আমাদের পাশে থাকবে। এ ছাড়া, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আমাদের সক্ষমতা এবং অনুকূল পরিবেশের প্রতি আরও আস্থাশীল হবে।
এই ধরনের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পারস্পরিক সুবিধার জন্য সহযোগিতার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় হবে। ভোক্তা ও ব্যবসায়ী উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ হবে এটাই আমরা চাই। এ লক্ষ্যে আমরা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিয়ে বাজার মনিটরিং করে থাকি। অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে অনেককে জেল জরিমানা করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির লোকবল কম থাকার কারণে পর্যাপ্ত অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না।
আরও পড়ুন: নিত্যপণ্য সরবরাহ প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, যদি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণ করেন তাহলে সহজেই বুঝা যায় সারা বিশ্ব একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ডের দোকানেও তিনটার বেশি টমেটো কেনা যাবে না বলে নির্ধারণ করে দেয়। জার্মানির দোকানগুলোতে তেলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। এ অবস্থায় আমাদের মতো দেশ এ সংকটের বাইরে থাকতে পারে না। মুহূর্তের মধ্যে হয়তো সমাধান হবে না তবে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে যাতে করে গ্লোবাল এই দুরবস্থার মধ্যে দেশের মানুষ ভালো থাকে।
সভায় আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমদ এবং ইউ-বাংলা বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি অতুল কেসাব, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম বক্তব্য রাখেন।