একইসঙ্গে যে তথ্যের ভিত্তিতে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে তার অনুলিপি সরবরাহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও আবেদেন করেছেন তিনি।
১৭ ডিসেম্বর ওই তিন মন্ত্রণালয়ে এ আবেদন করেন গোলাম আরিফ টিপু।
বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিজ চেম্বারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল পদমর্যাদায় থাকা চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবরে পাঠানো ওই আবেদনে বলা হয়, ‘গত ১৫ ডিসেম্বর রাজাকারের তালিকা প্রচার ও প্রকাশ করেছেন, সে জন্য অভিনন্দন। এ তালিকায় রাজশাহী বিভাগের.... নথিতে ঠিকানাবিহীন চতুর্থ নম্বর ‘গোলাম আরিফ অ্যাডভোকেট’ লিখা আছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হওয়ায় উহা প্রচার ও প্রকাশিত হয়েছে। ....রাজাকার তালিকায় আমার নাম যুক্ত থাকায় আমি হতবাক, বিস্মিত, মর্মাহত ও অপমানিত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাজাকার তালিকায় প্রচার ও প্রকাশের ক্ষেত্রে সীমাহীন অযত্ন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে অত্যন্ত অবহেলার সাথে এ তালিকা প্রকাশ ও প্রচার করেছে মর্মে সব মহলে অনুভূত।’
আবেদনে আরও বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিকট আমার জোর দাবি তারা তাদের ভুলটি অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন এবং অনতিবিলম্বে ভুল সংশোধন করে আমার নাম ‘গোলাম আরিফ অ্যাডভোকেট’ বাতিল ও প্রত্যাহারপূর্বক প্রজ্ঞাপন জারি করে গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আবেদনে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত তালিকা আমরা হুবহু ছাপিয়েছি। .... মন্ত্রণালয়ের নিকট আমার আকুল আবেদন আমার নাম ‘গোলাম আরিফ অ্যাডভোকেট’ গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করা হয়েছে যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেরিত রাজাকার তালিকার কপি এবং যে সব তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে ওই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে তার কপি সরবরাহের জন্য বিনীত আবেদন জানাচ্ছি।’
তিনি আরও জানান, এ সব আবেদনের অনুলিপি অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ও তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ককে অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ১৭ ডিসেম্বর এক প্রতিক্রিয়ায় চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু
বলেছেন, দাবি একটাই, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, সেই শক্তিকে যারা রাজাকার-আলবদরের তালিকায় যুক্ত করেছে সেটা কীভাবে হলো, তার উৎস কারা, সেটা খুঁজে বের করে আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত এই ভাষা সৈনিক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় একটি লিস্ট বের করলো রাজাকারের, সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে ..... আমাদের রাজাকারের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এটা বুঝে পেলাম না কোথা থেকে তারা এ শক্তিটা পেলেন। এটা মনে হয় যে মুক্তিযুদ্ধ সংস্থায় যুদ্ধপরাধীর পক্ষের শক্তি বা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি তাদের অবস্থান কিছুটা রয়ে গেছে। এবং সেখান থেকে এ জিনিসগুলো হচ্ছে উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে।’
পরে তার বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন। প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৪ আগস্ট একটি গেজেটের কথা উল্লেখ করে প্রসিকিউটররা বলেন, ওই গেজেটে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন, বিশেষ গেরিলা বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার ৩৩ নম্বরে অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু নাম রয়েছে।