সমুদ্রে নৌকায় ভাসমান রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদের ফোনে অনুরোধের প্রেক্ষিতে সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং সীমিত সম্পদ থাকা সত্বেও মানবিকতার পরিচয় দিয়ে ইতোমধ্যে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। ৫০০ রোহিঙ্গা সে তুলনায় অতি সামান্য। তারা এখন বাংলাদেশ সীমানায় নেই।
মানবিক কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে অনুরোধ করা হলেও এ এলাকার অন্যান্য দেশকে আশ্রয় দিতে বলা হয়নি। যুক্তরাজ্যের রয়েল জাহাজ এসেও তাদের উদ্ধার করে আশ্রয় দিতে পারে বলে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীকে ড. মোমেন বলেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের উচিত বাংলাদেশে অবস্থানরত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দেয়া।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের, বিশেষকরে উন্নত দেশগুলোর উচিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে এগিয়ে আসা।
‘এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের ওপরও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের দায়িত্ব বর্তায়। মিয়ানমারে এখনও মিলিটারি অপারেশন চলছে এবং রোহিঙ্গারা মারা যাচ্ছে। কিছুদিন আগেও তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা আবারও বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে। তারপরও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এবিষয়ে সোচ্চার নয়,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশের বহুলোক মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি হারিয়ে খাবারের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, যুক্তরাজ্যসহ উন্নত বিশ্বের উচিত মানবিক কারণে তাদের চাকরিতে বহাল রাখার বিষয়ে সোচ্চার হওয়া।
যুক্তরাজ্যের ক্রেতারা যাতে গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশে ক্রয়াদেশ বাতিল না করেন সে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশের গার্মেন্টসখাত সমস্যাসংকুল। এ বিষয়ে ড. মোমেন বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতে ক্রয়াদেশ বজায় রাখার জন্য যুক্তরাজ্যকে বিশেষ ফান্ড গঠনের অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যকে করোনা প্রতিরোধে উপহার হিসেবে চিকিৎসা সামগ্রী প্রেরণ করবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন লর্ড আহমেদকে এ সময় অবহিত করেন। এর জবাবে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী ড. মোমেনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।