এর মধ্যে দিয়ে প্রায় ১২০০ বছরের পুরনো রাজবাড়িটির অতীত ইতিহাস-ঐতিহ্য ফিরবে বলে মনে করছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার থেকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নয় সদস্যের একটি টিম দলবদ্ধভাবে এ খনন কাজ শুরু করে। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ সাদিকের প্রচেষ্টায় দুই মাসব্যাপী পুনঃখননের কাজ চলবে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক পরিচালকের নেতৃত্বে নয় সদস্য বিশিষ্ট টিমে রয়েছেন- ঢাকা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম, কুমিল্লা ময়নামতি যাদুঘরের কাস্টেডিয়ান ড. আহমেদ আব্দুল্লাহ, সহকারী কাস্টেডিয়ান মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, কুমিল্লা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সিনিয়র ড্রাফটম্যান সিরাজুল ইসলাম, জালাল আহমেদ, আলোকচিত্রকর নুরুজ্জামান মিয়া, রেকর্ডার ওমর ফারুক পাঠোয়ারী, অফিস সহায়ক লক্ষন দাস।
২০১৭ সালের ২০ থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দুজন শিক্ষক ও একদল শিক্ষার্থী গবেষক অধ্যাপক ড. অসিত বরণ পালের নেতৃত্বে এই হাওলি রাজবাড়ি সংরক্ষণ ও খননের লক্ষ্যে প্রাথমিক মাঠ জরিপ কার্য পরিচালনা করেছিলেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক পরিচালক ড. মুহাম্মদ আতাউর রহমান জানান, প্রথম দিনের খননকাজের মধ্য দিয়ে রাজবাড়ির সীমানা প্রাচীরের বেশ কিছু অংশ, রাজবাড়ির প্রবেশদ্বার সফলভাবে খনন করে দৃশ্যমান পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুরো খননকাজ শেষ হলে পর্যটকরা অনায়াসে এ রাজ্যের ঐতিহ্যের নির্দশন দর্শনের পাশাপাশি প্রায় ১২০০ বছরের পুরনো ইতিহাস সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবেন বলে আশা করি।’
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল (উত্তর) ইউনিয়নের হলহলিয়া গ্রামটি সুপ্রাচীনকালে লাউড় রাজ্যের রাজধানী ছিল। লাউড় রাজ্যের সীমানা ছিল পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্র নদ, পূর্বে জৈন্তিয়া, উত্তরে কামরুপ সীমান্ত ও দক্ষিণে বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত। বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই লাউড় রাজ্যের প্রাচীন নিদর্শন হাওলি প্রকৃতপক্ষে ছিল রাজবাড়ি। তৎকালীন রাজা বিজয় সিংহ আজ থেকে প্রায় ১২০০ বছর পূর্বে এই বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন।
বাড়িটি ৩০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। তৎকালে নির্মিত রাজ বাড়িটিতে ছিল বন্দীশালা, সিংহদ্ধার, নাচঘর, দরবার হল, পুকুর ও সীমানা প্রাচীর।