বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য চিন্তা করে তাদের জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যায় কি না চিন্তা করছি। এছাড়া অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্য খুব কম সময়ের জন্য খোলা যায় কিনা চিন্তা ভাবনায় আছে তবে সব কিছু নির্ভর করছে কোভিড -১৯ পরিস্থিতির ওপর । কারণ আবার করোনা আক্রান্ত বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কিছু মাথায় রেখে সিদ্ধান্তে নেয়া হবে।’
দীপু মনি বলেন, ‘একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্যও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া যায় কি না চিন্তা ভাবনা করছি।’
আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষা পেছানো হবে হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন , ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণে সীমিত আকারে করার চিন্তা করছি। তবে সব বিষয় পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। যখন দেখব পরিস্থিতি অনুকূল তখনই খুলে দেব।
‘আশা করছি এসএসসি পরীক্ষার সময় পেছাতে হবে না। যদি পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা পেছানো হয় তবে পরে সিদ্ধান্ত নেব,’ বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এসএসসি প্রি টেস্ট কীভাবে হবে, কারিগরি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের বিষয়ে খুব দ্রুত সময়ে জানাব।’
স্কুল ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এই ডিসেম্বর/ জানুয়ারিতে করোনা প্রকোপ বাড়তে পারে বলে আমরা শুনছি। সবকিছু মাথায় রেখে কখন কি পরিস্থিতি হয় যথাসময়ে জানিয়ে দেব।’
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেটিও সময়েই বলা যাবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান চতুর্থ বর্ষে যারা ইতোমধ্যে পাঁচটি পরীক্ষা দিয়েছেন তাদের বিষয়ে দিপু মনি বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়ন করা যাবে না। কারণ তারা পরীক্ষা শেষে চাকরিতে প্রবেশ করবেন। সেটি মাথায় রাখতে হবে। ’
টিউশন ফি নিয়ে তিনি বলেন, যেসকল অভিভাবক ক্ষতিগ্রস্ত তাদের বিষয়ে মানবিক আচরণ করতে হবে। যেহেতু এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ সেহেতু অপ্রয়েজনীয় কোনো ফি স্কুল কর্তৃপক্ষকে না নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ বিষয়ে একটি নির্দশনা দেব। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাতে যে ফি অতি প্রয়োজন সেটি নিতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
‘আগামী নতুন বর্ষে বই উৎসব হবে না। তবে যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বই পৌঁছে যাবে,’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব মাহবুবর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হবার পর ১৭ মার্চ স্কুল, কলেজসহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে অনলাইনে ক্লাস চলছে।
বর্তমানে অফিস-আদালতের কার্যক্রম ধীরে ধীরে চালু হয়ে গেলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও খুলে দেয়া হয়নি।
এর আগে গত ১ অক্টোবর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। তাছাড়া চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান, প্রাথমিক সমাপনি ও সমমান এবং জেএসসি ও সমমান পরীক্ষা বাতিল করে সরকার।
বাংলাদেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বুধবার আরও ২৩ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৮৬১ জনে।
এছাড়া নতুন করে এক হাজার ৪৯৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় এ সংখ্যা পৌঁছেছে চার লাখ তিন হাজার ৭৯ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।