বাংলাদেশ এনহ্যান্সিং ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড বেনিফিটস ফর আর্লি ইয়ার্স (বিইআইবিইই) প্রকল্পের জন্য ২১ ০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক পর্ষদ।
বুধবার(১ নভেম্বর) বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকল্পটির লক্ষ্য হচ্ছে পুষ্টির উন্নয়নে নগদ অর্থ স্থানান্তর ও পরামর্শ সেবা প্রদান এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের প্রায় ১৭ লাখ গর্ভবতী নারী এবং ৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের মায়েদের সরাসরি উপকৃত করা।
বাংলাদেশ-ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলাই সেক বলেন, 'বর্তমান শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বাংলাদেশে জন্ম গ্রহণকারী একটি শিশু সম্ভাব্য ৪৬ শতাংশ উৎপাদনশীল হতে পারে।
তিনি বলেন,‘এটা পরিবর্তন করা যেতে পারে। প্রসবপূর্ব এবং জীবনের প্রথম এক হাজার দিনের মধ্যে পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করা এবং শৈশবজুড়ে প্রতিক্রিয়াশীল যত্ন নেওয়া, একটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ এবং স্বাস্থ্যকে সর্বাধিক করতে সহায়তা করে। এটি তাদের আরও উৎপাদনশীল হতে এবং বড় হওয়ার পরে আরও উপার্জন করতে সক্ষম করে। প্রকল্পটি দরিদ্র মায়েদের তাদের সন্তানদের জন্য সময়মত এবং যথাযথ যত্ন সম্পর্কে অবহিত করতে সহায়তা করবে এবং তাদের বাচ্চাদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার উন্নতির জন্য সেই শিক্ষার উপর কাজ করার জন্য আয় সহায়তা সরবরাহ করবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
মানব উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও, শিশুদের মধ্যে দুর্বল পুষ্টি এবং শেখার দারিদ্র্য বাংলাদেশে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে রয়ে গেছে এবং কোভিড লকডাউনের সময় এটি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
এটি শিশুদের জ্ঞানের বিকাশ এবং তাদের ভবিষ্যতের উৎপাদনশীলতার উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে।
প্রকল্পটি সরকারের বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি, মা ও শিশু বেনিফিট প্রোগ্রাম (এমসিবিপি) সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণে সহায়তা করে প্রারম্ভিক শৈশব উন্নয়নে অবদান রাখবে।
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ সামাজিক সুরক্ষা অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্পের টিম লিডার আনিকা রহমান বলেন, ‘দারিদ্র্য, পিতামাতার দুর্দশা এবং বয়স-উপযোগী সম্পৃক্ততা ও উদ্দীপনার অভাব শিশুদের সর্বোত্তম বিকাশকে বিপন্ন করে তোলে।’
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
তিনি বলেন, ‘গর্ভবতী নারীদের জন্য যথাযথ পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রাথমিক পর্যায় থেকে শিশুদের সহায়তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও জনতাত্ত্বিক সম্ভাবনাকে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে। একটি শিশুর জীবনের প্রথম দিকে বিনিয়োগ করা, বিশেষত তাদের গুরুত্বপূর্ণ বিকাশের বছরগুলোতে, সমগ্র জাতির জন্য উল্লেখযোগ্য উপকার করতে পারে।’
প্রকল্পটি বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে ঋণের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হয়, যা ছাড়ের অর্থায়ন সরবরাহ করে এবং ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরের মেয়াদ রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে অন্যতম। স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার অনুদান, সুদমুক্ত ও ছাড়মূলক ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বর্তমানে ৫৭টি চলমান প্রকল্পে ১৬ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে বাংলাদেশে বিশ্বের বৃহত্তম আইডিএ কর্মসূচি রয়েছে।