ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিতে গঠিত জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি বাতিল করেছে সরকার।
সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব শামসুল আলম গত ২৭ অক্টোবর এক ফেসবুক পোস্টে এ কমিটির ভূমিকার সমালোচনা করার পর গতকাল (বুধবার) কমিটিটি বাতিল করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ছয় সদস্যের এ কমিটির সভাপতি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া সদস্য হিসেবে ছিলেন— উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব। আর সদস্য সচিব ছিলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকসহ যুগ্ম-সচিব ও এর উপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিতে গত ৮ জানুয়ারি ‘জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি’ গঠন করা হয়।
সে সময় কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। পরে তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দিতে উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে মাহফুজ আলম তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা হলে গত ২০ মার্চ তাকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়।
এরপর ২৫ আগস্ট সদস্য থেকে কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে নিয়োগ পান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। একইসঙ্গে কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কমিটি পুনর্গঠন করে সর্বশেষ গত ২১ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। পুনর্গঠিত কমিটির সদস্য পদ থেকে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে বাদ দেওয়া হয়।
এদিকে, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব শামসুল আলম গত ২৭ অক্টোবর ফেসবুক পোস্টে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে এসএসবির (সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড) ভূমিকার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ওনারা ওখানে বসে কী করেন? কেবল যোগ্য অফিসারদের আটকানো নাকি? জনপ্রশাসন কমিটির কাজটাই বা কী? রুলস অব বিজনেসের বাইরে গিয়ে করা এই অন্যায্য কমিটি মোখলেসের এইসব দুর্বৃত্তায়নকে বৈধতা দিয়েছে কেবল! কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হওয়া সচিব তাদের হাত দিয়েই গেছে!
তিনি আরও লেখেন, ‘এখনও ৩৪ জন ফ্যাসিস্ট সচিব থাকে কী করে? অথচ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের অনুমোদনের পরও সিনিয়র মোস্ট যোগ্য কর্মকর্তাকে তার প্রাপ্য পদে বসতে দেননি এই মোখলেস গং। এতবড় অবিচার বাংলার ইতিহাসে আর কখনো হয়নি। এই এসএসবি, এই কমিটি থাকায় মেধাবীদের দেশের জন্য কাজ করতে দেওয়া হয় না। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। এত এত অন্যায় করতে আমরা হাসিনাকে তাড়াইনি। হিসাব দিয়ে যেতে হবে।’