প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ৮মে পর্যন্ত জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে তার সাম্প্রতিক ত্রিদেশীয় সফরের ফলাফল সম্পর্কে একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন।
সোমবার বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
শেখ হাসিনা তার জাপানি সমকক্ষ ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে তার তিন দেশ সফরের প্রথম ধাপে জাপানে চার দিনের সরকারি সফরে ২৫ এপ্রিল টোকিওর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।
টোকিওতে অবস্থানকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিওর সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করেন।
এসময় তিনি এবং তার জাপানি সমকক্ষ কৃষি, শুল্কবিষয়ক, প্রতিরক্ষা, আইসিটি ও সাইবার-নিরাপত্তা, শিল্প উন্নয়ন, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি, জাহাজ পুনর্ব্যবহার এবং মেট্রোরেল বিষয়ক আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছেন।
তিনি একটি বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন এবং একটি কমিউনিটি রিসেপশনে যোগদানের পাশাপাশি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য দুই জাপানি নাগরিককে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ প্রদান করেন।
এছাড়া শেখ হাসিনা জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকো, জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির (জেবিসিসিইসি) চেয়ারম্যান ফুমিয়া কোকুবু, জাপানের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গেও আলাদাভাবে বৈঠক করেন।
এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) ইশিগুরো নোরিহিকো এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসো’র সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।
এরপর প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে যোগ দিতে তার তিন দেশ সফরের দ্বিতীয় ধাপে যুক্তরাষ্ট্রে ছয় দিনের সরকারি সফরে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে ২৮ এপ্রিল টোকিও ত্যাগ করেন।
তিনি ১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে আয়োজিত 'রিফ্লেকশন অন ৫০ ইয়ারস অব বাংলাদেশ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক পার্টনারশিপ' - শীর্ষক সেমিনারে অংশ নেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে শেখ হাসিনা আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা এবং ইউএস চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও সিইও সুজান পি. ক্লার্কের সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেন।
এছাড়াও, তিনি মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে একটি উচ্চ-পর্যায়ের কার্যনির্বাহী গোলটেবিল এবং একটি কমিউনিটি রিসেপশনে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী ৬ মে বাকিংহাম প্যালেসে আয়োজিত যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে লন্ডনের উদ্দেশে ৪ মে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করেন।
লন্ডনে শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথ লিডারস ইভেন্ট এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার ও বিদেশি প্রতিনিধিদের জন্য বাকিংহাম প্যালেসে রাজা ও রাণী কনসোর্টের রাজ্যাভিষেকপূর্ব সংবর্ধনা এবং একটি কমিউনিটি রিসেপশনেও যোগ দিয়েছিলেন।
তিনি সেখানে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এবং রানী জেটসুন পেমার সঙ্গে বৈঠক করেন।
এছাড়া রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিশর ও রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট, সিয়েরা লিওন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, গাম্বিয়া, নামিবিয়া ও উগান্ডার প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
গত ৯ মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।