সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিনহা হত্যার পরপরই চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে কারণ, উৎস, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে সার্বিক বিষয় বিশ্লেষণ করে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সে অনুযায়ী কমিটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে এসেছে। রিপোর্টে কি আছে আমরা এখনও দেখিনি।পরবর্তী সময়ে আমাদের সচিব এগুলো বিশ্লেষণ করে যেখানে যেটা প্রয়োজন সেই অনুযায়ী কাজ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় পুলিশি তদন্ত চলছে, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী। সেই কারণে আমরা প্রকাশ্যে কিছু জানাতে পারবো না। আমরা আদালতকে এটার সম্বন্ধে জানিয়ে দেব, আদালত মনে করলে এটাকে আমাদের কাছ থেকে অফিসিয়ালি নিয়ে যাবেন। এটাই হয়ে থাকে।আদালত তদন্তের জন্য হয়তো এটা নিয়েও নিতে পারেন। আমরা এ সম্পর্কে কিছু জানি না, এটা আদালতের এখতিয়ার। যাদের নামে রিপোর্ট আসবে, পরবর্তীতে করণীয় কী আপনাদের জানাবো।’
সিনহা হত্যা পরিকল্পিত ছিল কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট আমার কাছে মাত্র এলো। এর ভেতর কী লেখা আছে, কী উল্লেখ আছে- আমরা তো জানি না কিছু। আমরা বের করে নেই, এগুলো স্টাডি করি তারপর আপনাদের জানাতে পারবো।’
দুই বাহিনীর মধ্যে গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘দুই বাহিনীর মধ্যে গুজব ছড়িয়ে এদের অসস্তুষ্ট করবে আমরা এ ধরনের উপাদান পাইনি। আমরা মনে করি চমৎকার একটি পরিবেশ রয়েছে, আমরা দেখেছি পুলিশ প্রধান ও সামরিক বাহিনীর প্রধান দুজনে মিলে কক্সবাজারে গেছেন। তারা ব্রিফ করেছেন, কাজেই দুই বাহিনীর ভেতরে কিছু মতপার্থক্য রয়েছে এগুলো সত্য নয়। চমৎকার পরিবেশ রয়েছে, দুই বাহিনী একসাথে কাজ করছে।’
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা মনে করি এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটুক। কেন ঘটেছে, কীভাবে ঘটেছে এগুলো পুরোপুরি বিশ্লেষণ এখানে রয়েছে। সেগুলো আমাদের স্টাডি করতে হবে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে, সবাই সজাগ রয়েছে, আমরা মনে করি যে এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে, আমরা সবাই সজাগ রয়েছি।’
তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের পুলিশ বাহিনী যে আইনশৃঙ্খলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে, এই ঘটনাটি কোনোভাবেই তাদের ভূমিকাকে ম্লান করবে না। আমরা দেখেছি তারা পরিশ্রম করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছি আমাদের মন্ত্রণালয় যেটি নির্দেশনা দিয়েছে, এটির উৎস কী, কারণ কী, এই ধরনের ঘটনার প্রতিকারের ব্যাপারে কী ধরনের সুপারিশ করা যায়, সেই ব্যাপারে আমরা চারজন বিশ্লেষণ করেছি।’
কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন- সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল এসএম সাজ্জাদ হোসেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাজাহান আলী।
সাত কর্মদিবস- ১০ আগস্টের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বেঁধে দেয় মন্ত্রণালয়। এরপর প্রথমবার কমিটির সময় বাড়ানো হয় ২৩ আগস্ট পর্যন্ত। পরে কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সময় ফের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।