২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সারা দেশে গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ, তবে সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল আরও নিম্নমুখী, এবার পাসের হার মাত্র ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অথচ গত বছর এই বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সিলেট শিক্ষাবোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
ফল অনুযায়ী, সিলেট বিভাগে পাশের হার ৫১ দশমিক ৮৬, যা বিগত ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছর ২০২৪ সালে পাশের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৩৯ ভাগ, ২০২৩ সালে ৭১ দশমিক ৬২ ভাগ, ২০২২ সালে ৮১ দশমিক ৪০ ভাগ, ২০২১ সালে ৯৪ দশমিক ৮০ ভাগ, আর ২০২০ সালে শতভাগ, ২০১৯ সালে ৬৭ দশমিক ০৫, ২০১৮ সালে ৭৩ দশমিক ৭, ২০১৭ সালে ৭২ ভাগ, ২০১৬ সালে ৬৮ দশমিক ৫৯ ভাগ, ২০১৫ সালে ৭৪ দশমিক ৫৭ আর ২০১৪ সালে ৭৯ দশমিক ১৬।
২০২০ সালে করোনাকালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সবাইকে পাস করিয়ে দেওয়া হয়, যেটিকে ‘অটোপাস’ বলা হয়ে থাকে। ফলাফল প্রস্তুতের ক্ষেত্রে বিগত বছরের এসএসসির ফল বিবেচনা নেওয়া হয়। আর ২০২১ সালে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার কিছু নম্বর যোগ করে চূড়ান্ত ফলাফল তৈরি করা হয়েছিল, যার ফলে পাশের হার স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ছিল।
এবার সিলেটে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৬৯ হাজার ৯৪৪ জন, যার মধ্যে ৬৯ হাজার ১৭২ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থী ২৭ হাজার ৭৬৪ জন আর মেয়ে ৪১ হাজার ৪০৮ জন। মোট পাশকৃত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ৮৭০ জন, যার মধ্যে ছেলে ১৩ হাজার ৮৭০ এবং মেয়ে ২২ হাজার ১ জন। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬০২ জন, যার মধ্যে ছেলে ৬৮১ এবং মেয়ে ৯২১ জন। পাশের হারে পিছিয়ে রয়েছে ছেলেরা; ছেলে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পাশ করেছেন ৪৯ দশমিক ৯৬ জন আর মেয়েদের পাশের হার ৫৩ দশমিক ১৩ ভাগ।
প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী, পাশের হার সবচেয়ে কম মানবিক বিভাগে। এই বিভাগে পাশ করেছেন ৪৫ দশমিক ৫৯ ভাগ পরীক্ষার্থী। এ ছাড়া বিজ্ঞান বিভাগে পাশের হার ৭৫ দশমিক ৯৫ ভাগ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৫০ দশমিক ১৮। ১৬০২ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭৯ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ১৫৩ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
সিলেট বিভাগে পাশের হার সবচেয়ে কম মৌলভীবাজারে আর বেশি সিলেট জেলায়। সিলেটে পাশের হার ৬০ দশমিক ৬১ ভাগ, হবিগঞ্জে ৪৯ দশমিক ৮৮, সুনামগঞ্জে ৪৬ দশমিক ৩৫ এবং মৌলভীবাজারে ৪৫ দশমিক ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছেন।
গত বছর সিলেট বোর্ড থেকে ৬ হাজার ৬৯৮ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। এবারের ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৬০২ জন।
শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইংরেজি ও গণিতে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় সামগ্রিক ফল খারাপ হয়েছে। তাছাড়া অনেক কলেজে উপস্থিতির হারও কম ছিল।
এদিকে চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ৩২৩ টি কলেজের মধ্যে ৪টি কলেজ শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। আর শতভাগ পাশ করেছে মাত্র ৩টি প্রতিষ্ঠানে।
এবছর ফলাফল ঘিরে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আনন্দ উচ্ছাস দেখা যায়নি।