তিনি বলেন, ‘গেল দুই মাস আমরা স্বস্তিতে ছিলাম, তাই এখন আমরা কোনো কিছু মানছি না। যদি আমরা স্বাস্থ্যবিধি না মানি, সামনের দিকে আমরা আরও বড় বিপদে পড়তে যাচ্ছি।’
রাজধানীর শ্যামলীতে ২৫০ আসন বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় মহাপরিচালক করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দেশের সমস্ত হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।
‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আগামীতে বিপদের মুখে পড়বে দেশ’ এমন সতর্ক বার্তা দিয়ে তিনি মনে করিয়ে দেন, স্প্যানিশ ফ্লুর দ্বিতীয় ঢেউয়েই বেশি মানুষ মারা যায়।
মহাপরিচালক জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি জোরদার করতে এরই মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
‘এখন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই তরুণ, তাদের বেশির ভাগেরই আইসিইউ লাগছে,’ বলেন তিনি।
ইউকে ও আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন রূপের কারণে দেশে সংক্রমণ বাড়ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিনম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সংক্রমণ বাড়তে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা: শিক্ষামন্ত্রী
খুরশীদ আলম জানান, শিগগিরই আসছে কেনা টিকার পরবর্তী চালান। ‘তবে টিকা নেয়া মানে স্বাস্থ্যবিধি না মানা নয়। কারণ, প্রথম ডোজ নেয়ার পর প্রতিরোধ ক্ষমতা সেভাবে তৈরি হয় না। আবার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পরও প্রতিরোধ ক্ষমতা কতদিন থাকবে তাও কেউ জানেন না। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই,’ বলেন তিনি।
দেশের সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি
দেশে ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্ত আরও বেড়েছে বলে রবিবার জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে আট হাজার ৫৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১৫৯ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯৫ জনে পৌঁছেছে।
এর আগে শনিবার অধিদপ্তর জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে ১২ জনের মৃত্যু এবং ১ হাজার ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৯টি পরীক্ষাগারে ১৬ হাজার ৫২৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ পরীক্ষা করা হয় ১৬ হাজার ২০৬টি নমুনা।
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৭.১৫ শতাংশ। এর আগে শনিবার ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ছিল ৬.২৬ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৩৮৫ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১১ হাজার ৬৯৫ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমকি ৮০ শতাংশ।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন: কোভিড ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপ দরকার: ডব্লিউএইচও
মাস্ক না পরলে, সামাজিক দূরত্ব না মানলে করোনার সংক্রমণ তো বাড়বেই: মন্ত্রী