জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মধ্যে দিয়ে লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন গতকাল মঙ্গলবার স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব-গাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করেছে।
হাইকমিশনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দিনটি উপলক্ষে হাইকমিশনের বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জে আয়োজিত এক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম জাতির পিতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ ২৪ বছরের নির্ভীক, আপোষহীন ও বিচক্ষণ নেতৃত্ব ছাড়া বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বিশ্বে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতো না।’
হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতার আদর্শই অনুসরণ করে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলছেন।’
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত
এপ্রসঙ্গে তিনি বিগত দেড় দশকে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ দারিদ্র্যবিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে সেসব বিশেষভাবে উল্লেখ করেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
হাইকমশিনার ৮ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে যুক্তরাজ্যে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সফর এবং ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক বৈঠকই বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছে বলে উল্লেখ করে আগামীতে এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও গভীর হবে বলে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন।
বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক ও আবদুল আহাদ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গভবনে ভুটানের রাজা-রানীকে সংবর্ধনা
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার অতিথি ও মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্য এবং মহান মুক্তিযোদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সকালে হাইকমিশনার দূতাবাসে কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের র্কমসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মীত একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবস পালিত