রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের পরামর্শক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে যৌথ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তি সই হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রেলভবনে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সুবিধাদি প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের পরামর্শক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে যৌথ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তি সই হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলের পক্ষ থেকে চুক্তিতে সই করেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান এবং যৌথ পরামর্শ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্স গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড (জাপান) এর জিএম ইউজি অসানো চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, একটি উন্নত, আধুনিক রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রেলওয়ে এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান: প্রধানমন্ত্রী
২০৪৫ সাল পর্যন্ত স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। একটি ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে রেলওয়ের উন্নয়নে কাজ হচ্ছে।
তিনি বলেন, রেল ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার ২০১১ সালে আলাদা মন্ত্রণালয় করে দিয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে আমরা একটি রুগ্ন, ভঙ্গুর রেল ব্যবস্থা পেয়েছি, সেখান থেকে রেলখাতকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ওপর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশা তৈরির কাজের লক্ষ্যে কনসালটেন্সি সার্ভিস নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
তিনি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি তুলে ধরে বলেন, আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হার্ডিঞ্জ সেতু শতবর্ষ পার করেছে। হার্ডিঞ্জ সেতুর পাশাপাশি একটি নতুন সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে যাচাই করন ও বিস্তারিত নকশা তৈরি, নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা/লাকসাম রুটে কর্ড লাইন নির্মাণ করা।
তিনি বলেন, এটি নির্মিত হলে ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্ব ৯১ কিলোমিটার কমে যাবে। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-তারাকান্দি-জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ বাজার সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েল গেজে রুপান্তর প্রকল্প, যশোর-বেনাপোল রুটে বিদ্যমান লাইনের সমান্তরাল একটি ব্রডগেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্প, ভৈরব বাজার-ময়মনসিংহ সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজ লাইন কে ডুয়েল গেজ অথবা ব্রডগেজ লাইনে রুপান্তর প্রকল্প, সান্তাহার-বগুড়া-কাউনিয়া-লালমনিরহাট সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজকে ব্রডগেজ লাইনে রূপান্তর করন প্রকল্প সহ মোট ১১ টি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশা তৈরীর লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে রেলওয়ে ওয়ার্কশপ স্থাপনে চুক্তি সই
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সারা দেশকে একগেজে রূপান্তর করার। এ লক্ষ্যে সকল মিটারগেজ পর্যায়ক্রমে ব্রডগেজে রূপান্তর করা হবে।
কনসালটেন্স সার্ভিসের বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে সকল কর্মকর্তা চাকরি থেকে চলে যাচ্ছে তাদের সমন্বয়ে নিজস্ব কনসালটেন্সি ফার্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে রেলওয়ে কাজ করছে।
এর দ্বারা দেশের নিজস্ব সক্ষমতা গড়ে উঠবে পাশাপাশি দেশের অর্থ বাঁচবে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে মোট ২৩৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: লোকসান সত্ত্বেও বাংলাদেশ রেলওয়ে ডেমু ট্রেন মেরামত করবে