টাইগার নিউ এনার্জি সফলভাবে ২৭ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছে। যা বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সিড রাউন্ডে বিনিয়োগ হিসেবে একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।
এই রাউন্ডের নেতৃত্বে থাকা ওয়েভমেকার পার্টনারস একটি নেতৃস্থানীয় দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম। যার টেকসই ও উদ্ভাবনী স্টার্টআপগুলোকে সমর্থন করার একটি শক্তিশালী ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে।
বিষয়টি এমন সময়ে হলো যখন বিশ্বব্যাপী বিলাসবহুল ব্র্যান্ডগুলো বৈদ্যুতিক যানবাহনের বিপ্লবকে আলিঙ্গন করতে শুরু করেছে এবং বাংলাদেশ একটি উদ্ভাবনীয় পদ্ধতির নেতৃত্ব দিচ্ছে।
প্রতিদিন ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন বৈদ্যুতিক যানবাহন দেশের রাস্তায় চলাচল করে। কিন্তু এগুলো সাধারণ গাড়ি নয়। এগুলো ৩ চাকার বৈদ্যুতিক যান, যা বাংলাদেশের নগর পরিবহনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। উদ্ভাবন এবং প্রতিশ্রুতির শক্তি প্রদর্শন করে ব্যাপক সরকারি ভর্তুকি ছাড়াই এটি সম্ভব হয়েছে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন গ্রাজুয়েট নিকোল মাও ও ইউয়ে ঝু বাংলাদেশে ৩ চাকার ব্যাটারিচালিত যানবাহনের জন্য নিয়ে এসেছে যুগান্তকারী এক উদ্ভাবন।
টাইগার নিউ এনার্জি নামক কোম্পানির মাধ্যমে তারা শপথ করেছেন দেশজুড়ে পরিবেশবান্ধব যাতায়াত ব্যবস্থা ছড়িয়ে দেওয়ার। তাদের উদ্ভাবন হচ্ছে- লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি বিনিময় করার স্টেশন।
৩ চাকার ব্যাটারি চালিত যানবাহনগুলোয় সাধারণত ব্যবহৃত হয় লেড এসিড ব্যাটারি, যার আয়ুষ্কাল কম এবং চার্জ দেওয়ার সময় অনেক বেশি। তবে দৈনন্দিন ব্যবহারের যানবাহনের জন্য লেড এসিড ব্যাটারির ব্যবহারের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা আছে। একটি ব্যাটারি চার্জ হতে সময় লাগে প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা।
স্বল্প আয়ের চালকদের বিপুল সময় এবং উপার্জন নষ্ট হয় ব্যাটারি পুনরায় চার্জ দিতে যেয়ে। এছাড়া একবার এই ব্যাটারি পরিবর্তনের খরচও অনেক বেশি। লেড এসিড ব্যাটারির তুলনায় লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব। তাই টাইগার নিউ এনার্জির স্টেশনগুলো ব্যবহার করে চালকরা কয়েক মিনিটের মাঝেই নিজের ব্যাটারিটা পরিবর্তন করে নতুন একটি চার্জ করা ব্যাটারি নিতে পারবেন।
তাছাড়া তাদের ব্যাটারি পরিবর্তনের এককালীন খরচ দেওয়া লাগবে না। মাত্র কয়েকশ’ টাকা খরচ করেই, চালকরা সম্পূর্ণভাবে চার্জ করা ব্যাটারি পেয়ে যেতে পারবেন।
যুগান্তকারী এই প্রযুক্তি বাস্তবায়নের জন্য হার্ভার্ডের দুই উদ্যোক্তা বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশকেই। নিজেদের দেশ না হলেও, বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতির কারণে তারা এই দেশে টেকসই বিদ্যুৎ নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা দেখতে পান।
তারা প্রমাণ করতে চান, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের জনগণ পরিবেশবান্ধব ও সময়োপযোগী সমাধান নিয়ে সচেতন। পৃথিবীর সবচাইতে ঘনবসতিপূর্ণ দেশের মাঝে একটি হওয়ায় বাংলাদেশের জন্য যাতায়াত ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে পরিবেশবান্ধব করে তোলাটা দুরূহ কাজ। বেশিরভাগ যানবাহনই এখনো তেল বা গ্যাসের উপর নির্ভরশীল।
আরও পড়ুন: চলতি বছরে ৯০০ কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছে বাংলাদেশ: বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান