প্রতিবন্ধীদের নেতৃত্ব কেবল নিজস্ব উন্নয়নের জন্য নয় উল্লেখ করে বক্তারা জোর দিয়ে বলেছেন, তারা সমাজের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
তারা আরও বলেন, তাই এটি এখন সময়ের দাবি। তারা সমাজের এক অনন্য শক্তি, যারা সঠিক সুযোগ পেলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারেন।
সোমবার (২ ডিসেম্ব) ৩৩তম আন্তর্জাতিক ও ২৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেক ক্যাসলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, শুধু সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নয় বরং প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে তাদের কর্মবণ্টন বিধিতে প্রতিবন্ধীদের বিষয়টি নিয়ে আসতে হবে। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক জাতীয় বাজেট বরাদ্দ রাখতে হবে। দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে।
এছাড়া এই কাজে ওপিডিগুলো রিসোর্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে পারে এবং এ সংক্রান্ত নীতিমালা ও ব্যবস্থা পরিবর্তনের উদ্যোগ জরুরি বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা।
আরও পড়ুন: ঢামেকে দুর্ভোগের অপর নাম শৌচাগার, নেই নারী-প্রতিবন্ধীদের কোনো সুবিধা
বক্তারা আরও বলেন, প্রতিবন্ধীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সক্ষমতা উন্নয়ন করে অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন আইনের বাস্তবায়ন। আবার সব কাজেই সবসময় বাড়তি অর্থ প্রয়োজন নাও পড়তে পারে, দরকার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন। কাজেই প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য অর্থের সংস্থান নেই - এটা যেন কখনও অজুহাত না হয়।
কারিতাস বাংলাদেশ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, এডিডি ইন্টারন্যাশনাল, এবং সিবিএম গ্লোবাল ডিসঅ্যাবিলিটি ইনক্লুশান বাংলাদেশের সহযোগিতায় ডিজএ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশনের (ডিসিএফ) উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন।
সম্মানিত অতিথি ছিলেন এডিডি ইন্টারন্যাশনালের টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ফারজানা আহমেদ, কারিতাস বাংলাদেশের কো-অর্ডিনেটর (ডিআরআর-ডিএম) আইরিন মুর্মু, ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর নাজরানা ইয়াসমিন হীরা।
অনুষ্ঠানে ডিসিএফ’র নির্বাহী পরিচালক নাসরিন জাহানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিএফ’র টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর আবু হানিফ মোহাম্মদ ফরহাদ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য দাতা সংস্থার তহবিল ব্যবহারে এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধন থাকার বাধ্যবাধকতা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনের (ওপিডি) জন্য প্রতিবন্ধকতা। কাজেই এই বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি। যাতে করে তারা ব্যুরোর নিবন্ধিত সংস্থার সহযোগী হয়ে সহজেই কাজ করতে পারে।
এছাড়াও ব্যুরোতে নিবন্ধনপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ওপিডির জন্য নিবন্ধন ফি ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১০ হাজার করার পক্ষে মত দেন তিনি।
মূলধারার বিভিন্ন প্রকল্পে নির্দিষ্ট শতাংশ তহবিল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে ব্যয় করার নির্দেশনা দেওয়ার পক্ষেও তিনি মত দেন।
তিনি বলেন, এনজিওতে প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানে নিড অ্যাসেসমেন্ট, ক্যাপাসিটি অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে উপযুক্ত কর্মপরিবেশ তৈরি হতে পারে।
ব্যুরোতে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তির জন্য অংশীজনদের সভাগুলোতে ওপিডিদের অন্তর্ভুক্ত করবেন বলে জানান মহাপরিচালক।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিসিএফ’র চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান, বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং প্রতিবন্ধীরা।
আরও পড়ুন: সরকারি স্কুল চলছে বেসরকারি শিক্ষক দিয়ে, সেবা পাচ্ছে না প্রতিবন্ধীরা